
ইসলাম ও নাস্তিক্যবাদ
একজন নাস্তিক দেশ ও জনগণের জন্যে ক্ষতিকর নয় যদি তিনি দেশের প্রচলিত আইনে কোন অপরাধ না করেন। অপরাধের শাস্তির ক্ষেত্রে আস্তিক ও নাস্তিক সমান। একজন আস্তিকের যেমন মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে এবং তার ধর্মের দিকে তিনি সবাইকে আহবান করতে পারেন; নাস্তিকেরও রয়েছে তেমন অধিকার।
কোরআনে বলা হয়েছে, আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কোন ব্যক্তি হেদায়েতপ্রাপ্ত হয় না। অতএব কোন ব্যক্তি যদি আল্লাহর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করতে না পারে তার জন্যে তাকে আক্রমন করা যাবে না, তাকে বোঝাতে হবে। আবার বোঝালেও সে বুঝবে এমন আশা করা যাবে না, কেননা কোরআন বলে কোন মানুষের অন্তরে মোহর মেরে দেয়া হলে সে কখনও বিশ্বাস স্থাপন করবে না। মহান আল্লাহ তাকে হেদায়েত দান করলে সে নিজেই ঈমান আনবে।
মত প্রকাশের স্বাধীনতা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। নাস্তিক যদি তার বিশ্বাসের সপক্ষে মতামত দান করতে চায়, তা থেকে তাকে নিবারণ করা যাবে না। তার মতামতের বিপক্ষে মতামত প্রদান করে নাস্তিক্যবাদকে অগ্রহণযোগ্য করার চেষ্টা করা যাবে। তবে মত প্রকাশ মানে কটাক্ষ করা নয়। কোন ব্যক্তির বিশ্বাসের চর্চা করতে বাধা প্রদান করা যাবে না। কেননা বিশ্বাস কোন ব্যক্তির ভিতর উদয় হয়, ব্যক্তি নিজে বিশ্বাস স্থাপন করতে পারে না। ব্যক্তির ভিতর যে বিশ্বাসের জন্ম হয় তিনি সেই বিশ্বাসকে ধারণ করেই নিজেকে পরিচালিত করেন। তা ধর্মীয় বিশ্বাস হোক, রাজনৈতিক বা পার্থিব যে কোন বিষয়ে হোক। সেজন্যেই জগতে মানুষের মধ্যে এত ভেদাভেদ, এত শ্রেণীভেদ।
এই শ্রেণীভেদ প্রাকৃতিকভাবে হয়। একে মেনে নিতে হবে। নিজস্ব মতামত অন্যের কাছে প্রকাশ বা অন্যের মতামত পর্যালোচনা করতে হবে সহনশীলতা নিয়ে। প্রতিটি মানুষ তার নিজের বিশ্বাস ও সিদ্ধান্তকে সঠিক মনে করে। সেখান থেকে তাকে সরিয়ে অন্য একটি বিশ্বাস স্থাপন করাতে হলে দৈহিক শক্তি প্রয়োগ সঠিক পন্থা নয়। বিশ্বাস যেমন শারিরিক বা বাহ্যিক কোন বিষয় নয়, তেমনি শারিরিক বা বাহ্যিক কোন উপায়ে বিশ্বাস পরিবর্তন করা যায় না। বিশ্বাস পরিবর্তন করাতে হলে মনের ওপর ইতিবাচকভাবে প্রভাব বিস্তার করতে হয়। তার জন্যে দরকার প্রজ্ঞা, যুক্তি ও ধারণ ক্ষমতা অনুসারে গ্রহণযোগ্য উপস্থাপনা।
– ইয়ারুল ইসলাম