Cinque Terre

সমৃদ্ধির সনদ

CHARTER OF PROSPERITY

দেশ পরিচালনার নির্দেশিকা
(ইস্তেহার)

বাংলাদেশ কংগ্রেস

ভূমিকা

একটি রাজনৈতিক দল কী চায়, ক্ষমতায় গেলে তারা জনগণকে কী দেবে, তখন দেশের সংবিধান কেমন হবে, আইন কেমন হবে, কেমন হবে তাদের সরকার ব্যবস্থা, মন্ত্রীসভা, প্রশাসন ব্যবস্থা, সেবা ব্যবস্থাপনা ইত্যাদির একটি সুনির্দিষ্ট রূপরেখা থাকতে হবে। জনগণের সামনে সেই রূপরেখা তুলে ধরতে হবে। জনগণ যদি সেই রূপরেখা পছন্দ করে, তবে তাতে জনগণ সমর্থন দেবে। জনগণকে অন্ধকারে রেখে অজানা অপরিচিত একটি সরকার ব্যবস্থা তাদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে শাসন করা সঠিক নয়। জনগণ যে শাসন ব্যবস্থা চায় না, তা তাদের ওপর চাপানো যায় না। যদি চাপাতে হয় তখন অগণতান্ত্রিক পন্থা অবলম্বন করতে হয়। সেই অগতান্ত্রিক পন্থা হয় বিপ্লবের মাধ্যমে না হয় সামরিক শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে আসে। এ উভয় পন্থাই অনৈতিক ও ধ্বংসাত্মক। শাসনতন্ত্র গ্রহনের সিদ্ধান্ত জনগণের নিজস্ব ব্যাপার। কাউকে এটি চাপানো যায় না। এটি মানতে জনগণকে তখনই বাধ্য করা যায় যখন এর ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক পন্থায় কোন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে বিভিন্ন সময় যে সব দল দেশ পরিচালনার ক্ষমতা পেয়েছে তাদের শাসন ব্যবস্থার রূপ জনগণ দেখেছে। তারা গতানুগতিক ধারায় দেশ শাসন করেছে। এদেশের আইন ও প্রশাসন ব্যবস্থার আশানুরূপ সংষ্কার কোন দল করেনি। একই চেয়ারে শুধু লোক বদলিয়েছে। অতি ডান ও অতি বাম ধারার দলগুলোর সে ধরণের কোন রূপরেখার কথা শোনা যায় না, যদিও তারা বিভিন্ন তত্ত্ব নিয়ে রাজনীতির মাঠ চাঙ্গা রাখে। নতুন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ কংগ্রেস ‘সমৃদ্ধির সনদ’ প্রনয়ন করেছে যেখানে দেশ পরিচালনার সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

একটি দেশের সমৃদ্ধির প্রধান অন্তরায় দুর্নীতি ও অদক্ষতা। দুর্নীতিমূক্ত দক্ষ প্রশাসন ও জনগোষ্ঠি পেতে হলে দরকার প্রচলিত আইন ও প্রশাসন পদ্ধতির সংষ্কার। এ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা না দিয়ে সবাই দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে চান। ফলে কাজের কাজ কিছুই হয় না। ক্ষমতার হাত বদল হলেও সবাই একই ধাঁচে দেশ চালাচ্ছে। দেশের আশানুরূপ অগ্রগতি কারও হাতে হচ্ছে না। বাংলাদেশ কংগ্রেস এই ইস্তেহারে দেশের আইন ও প্রশাসন পদ্ধতি পরিবর্তনের সুনির্দিষ্টি দিকনির্দেশনা দিয়েছে। আশা করা যায় এই নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ অচিরেই সমৃদ্ধির চরম শিখরে পৌছে যাবে।

বাংলাদেশ কংগ্রেসের রাজনীতি মূলতঃ গবেষণামূলক। কোন প্রকার ধ্বংসাত্মক বা চরম পন্থা অবলম্বনের পরিবর্তে দেশের সমস্যাগুলি চিহ্নিত করে সমাধানের পথ হিসেবে এই ইস্তেহার রচনা করা হয়েছে। দেশ পরিচালনার উপযোগী দক্ষ জনশক্তি তৈরী করাই এই ইস্তেহারের উদ্দেশ্য। এর উৎকর্ষতার জন্যে বা সময়ের প্রয়োজনে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে, প্রজ্ঞাবান জনগণের সুচিন্তিত মতামতের ভিত্তিতে এবং দেশ ও জনগণের স্বার্থে এর যে কোন অংশের যুক্তিসঙ্গত পরিবর্তন বিবেচনা করা হবে। সুতরাং দেশ পরিচালনার এই নির্দেশিকায় যে কোন গঠনমূলক মতামত সাদরে গৃহীত হবে।

– – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – –

বাংলাদেশ কংগ্রেস
ইস্তেহার
সমৃদ্ধির সনদ

১. সরকার ও প্রশাসন
১.১: জনপ্রতিনিধিদের কাজ হবে শুধুমাত্র তদারকি ও সুপারিশমূলক। অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে সংসদ সদস্যরা আইন প্রণয়ন করবেন। বিনিময়ে তারা সরকারের কাছ থেকে পরিমিত সম্মানী গ্রহন ছাড়া অন্য কোন সুবিধা গ্রহন করবেন না। প্রজাতন্ত্রের সকল কাজ করবেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারিরা এবং জনপ্রতিনিধিরা সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে জনগণের কাঙ্খিত সেবা আদায় করবেন। তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবেন এবং কোন সরকারী কর্মকর্তা বা কর্মচারী তার উপযুক্ত দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে যে কোন জনপ্রতিনিধি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করতে পারবেন।

১.২: রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কোন স্থাপনা বা প্রতিষ্ঠান উদ্বোধন করবেন না। কোন স্থাপনা জাতীয় বা জেলা পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ হলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী এবং উপজেলা বা ইউনিয়ন/পৌর পর্যায়ের হলে সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্য উহার উদ্বোধন করবেন।

১.৩: প্রধানমন্ত্রীসহ সকল মন্ত্রী সার্বক্ষনিক দাপ্তরিক দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন এবং সারাদেশকে মনিটরিং করবেন। বিশেষ কারণ ছাড়া তারা দপ্তর ত্যাগ করতে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রী সকল মন্ত্রীদের সাথে সার্বক্ষনিক সমন্বয় সাধন করবেন।

১.৪: সরকারের সফলতা কোন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রচার করা যাবে না।

১.৫: প্রতি ইউনিয়নের দৈনন্দিন সংগঠিত অপরাধ ও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা এবং গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান উপজেলা চেয়ারম্যানকে অবহিত করবেন; প্রতি উপজেলায় দৈনন্দিন সংগঠিত অপরাধ ও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা এবং গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে উপজেলা চেয়ারম্যান জেলা চেয়ারম্যানকে অবহিত করবেন; প্রতি জেলার দৈনন্দিন সংগঠিত অপরাধ ও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা এবং গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে জেলা চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীকে অবহিত করবেন এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী তাঁর মন্ত্রনালয় সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাসমুহ প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করবেন। প্রধানমন্ত্রী এভাবে সমগ্র দেশ সম্পর্কে মুহুর্তের মধ্যে অবগত হবেন এবং মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদেরকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবেন।

১.৬: প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে অভিযোগ বিভাগ থাকবে। এই দপ্তরের অধীনে ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে নাগরিক অভিযোগ কেন্দ্র থাকবে। নাগরিক সেবা সংক্রান্ত যে কোন অভিযোগ নাগরিকরা সরাসরি লিখিতভাবে উক্ত কেন্দ্রে রক্ষিত বক্সে জমা দিবেন। কেন্দ্রসমুহের সংশ্লিষ্ট পরিচালকগণ উক্ত অভিযোগসমুহ সংক্রান্ত বিষয়ে তাৎক্ষনিক তদন্ত করে এবং সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে অভিহিত করে অভিযোগের সত্যতা থাকলে অভিযোগ প্রাপ্তির চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে উর্ধ্বতন কর্র্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে জানাবেন। প্রধানমন্ত্রী প্রাপ্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনতিবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।

১.৭: জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তা-কর্মচারিরা দেশ বা বিদেশ থেকে কোন প্রকার ব্যক্তিগত সংবর্ধনা ও পুরষ্কার গ্রহণ করতে পারবেন না এবং তাদের আগমন উপলক্ষে কোন তোরণ নির্মাণ করা যাবে না।

১.৮: সরকারী প্রচারণায় ব্যবহার্য কোন প্রচারপত্র, পোস্টার, ফেস্টুন, বিজ্ঞাপন ইত্যাদিতে জনপ্রতিনিধি ও তাদের অধীনস্তদের ছবি ব্যবহার করা যাবে না।

১.৯: সরকারী উদ্যোগে কোন জনপ্রতিনিধির ভাস্কর্য নির্মাণ করা যাবে না, তবে মৃত্যুর পরে তাদের নামে বিভিন্ন স্থাপনার নামকরণ করা যাবে। যদি কোন জনপ্রতিনিধির নামে দেশের কোথাও কোন কিছুর নামকরণ থাকে, তবে তাঁর নামে নতুন কোন কিছুর নামকরণ করা যাবে না। বিষয়ভিত্তিক স্থাপনার নামকরণের ক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিদের চেয়ে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের কৃতি ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।

১.১০: দায়িত্বপালনকালে কোন জনপ্রতিনিধি ও তার অধীনস্তদের বৃদ্ধি পাওয়া সম্পদ রাষ্ট্র বরাবর বাজেয়াপ্ত করা হবে।

১.১১: মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যসহ জনপ্রতিনিধিদের সুযোগ-সুবিধা সংক্রান্ত আইন সংশোধন করে তাদের জবাবদিহিতা বাড়ানো হবে।

১.১২: জনপ্রতিনিধিদের জন্যে নিন্মোক্ত যোগ্যতাসমুহ বাধ্যতামূলক করা হবে-
(ক) পচিশ থেকে সত্তর বছর বয়স্ক ও বিবাহিত হতে হবে, (খ) বৈধ আয়ের উৎস থাকতে হবে এবং (গ) ফৌজদারী মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও সরকারী চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে যথাক্রমে রায় ও অবসরের পর তিন বছর পার করতে হবে।

১.১৩: প্রজাতন্ত্রের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য রেশন ব্যবস্থা চালু করা হবে এবং প্রচলিত অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বজায় থাকবে।

১.১৪: বর্তমানে উপজেলা পর্যায় থেকে যে প্রশাসন ব্যবস্থার প্রচলন রয়েছে তা শুরু হবে ইউনিয়ন, পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড পর্যায় থেকে। সব মন্ত্রনালয়ের একজন প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা এসব পর্যায়ে দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন। পদোন্নতির মাধ্যমে তারা পর্যায়ক্রমে উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে কাজ করবেন।

১.১৫: পদোন্নতির ক্ষেত্রে সব সময় জ্যেষ্ঠতা, নিয়োগকালিন সময়ের মেধাতালিকা ও সার্ভিস রেকর্ড বিবেচনা করতে হবে।

১.১৬: কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে ভিন্ন মন্ত্রনালয়, কমিশন, কর্তৃপক্ষ, কর্পোরেশন ইত্যাদিতে বদলি করা যাবে না। স্ব স্ব ক্ষেত্রে দক্ষ ও অভিজ্ঞদের সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে কাজ করতে দেয়া হবে।

১.১৭: প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের চাকরি শুরু হবে ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (বর্তমানে সচিব) হিসেবে। পদোন্নতির মাধ্যমে তারা পর্যায়ক্রমে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার হয়ে মন্ত্রনালয়ের সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা হবেন।

২. সংসদ পরিচালনা নীতি
২.১: কোন ব্যক্তি তিন বারের অধিক রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকার প্রধান থাকতে পারবেন না এবং তিন বার সরকার প্রধান হলে তিনি রাষ্ট্রপ্রধান হতে পারবেন না।

২.২: স্পীকার হতে হলে পঞ্চাশ বছর বয়স ও নির্বাচিত সংসদ সদস্য হতে হবে।

২.৩: স্পীকারের অনুমতি ছাড়া কোন সংসদ সদস্য পর পর দশ কার্য দিবস সংসদে অনুপস্থিত থাকলে তার সদস্য পদ বাতিল হবে।

২.৪: সরকার দলীয় সংসদ সদস্যরা আইনজীবী হিসেবে রাষ্ট্রের বিপক্ষে মামলা পরিচালনা করতে পারবেন না।

৩. সংবিধান ও আইন
৩.১: দেশ ও জাতির কল্যাণে এবং অত্র ইস্তেহার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সংবিধানসহ যাবতীয় আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন আনা হবে।

৩.২: বাংলাদেশ সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে সংসদ সদস্যদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে।

৩.৩: সাধারণ কয়েদীদেরকে জরিমানার বিনিময়ে শর্ত সাপেক্ষে কারামুক্তি দেয়ার বিধান করা হবে।

৩.৪: বিচার বহির্ভূতভাবে রাজনৈতিক বিবেচনায় বা নির্বাহী আদেশে কোন মামলা প্রত্যাহার করা যাবে না।

৩.৫: আসামী গ্রেফতারের সময় গ্রেফতারকারী আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের ছবিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষরিত নির্ধারিত পরিচিতি ফরম নিজহস্তে পূরণ করে আসামী কর্র্তৃক নির্দেশিত ব্যক্তির কাছে জমা দেয়ার বিধান করা হবে।

৩.৬: প্রযোজ্য ক্ষেত্রে স্ত্রী, সন্তান, পিতা, মাতা ও নির্ভরশীলদেরকে ভরণপোষণ না দেওয়াকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হবে এবং এক্ষেত্রে সাজা প্রদান ছাড়াও দেওয়ানী মোকদ্দমা করার বিধান করা হবে।

৩.৭: সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের পরিবার রাষ্ট্র নির্ধারিত ভাতা পাবে।

৪. বিচার বিভাগ
৪.১: আইন বিভাগ ও শাসন বিভাগের ন্যায় বিচার বিভাগেও পৃথক সচিবালয় স্থাপন করা হবে এবং বিচার ব্যবস্থার বিকেন্দ্রিকরণ করে দেশের সকল বিভাগে পৃথক হাই কোর্ট স্থাপন করা হবে। উপজেলা আদালত, জেলা আদালত, উচ্চ আদালত ও শীর্ষ আদালত- এই চার স্তরে বিচার ব্যবস্থা রাখা হবে।

৪.২: পেশাগত দক্ষতা, সততা, নিষ্ঠা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নিন্ম ও উচ্চ আদালতে বিচারক ও আইন কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে। নিন্ম আদালতের বিভিন্ন পর্যায়ের বিচারক নিয়োগে ৩০% কোটা আইনজীবীদের জন্য নির্ধারণ করা হবে।

৪.৩: বিচারকদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠন করা হবে যেখানে আইনজীবী ও বিচার প্রার্থীরা তাদের অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন।

৪.৪: হাইকোর্ট বিভাগে বেঞ্চ পূনর্গঠনে শুধু বিচারক পরিবর্তন করে অধিক্ষেত্র ও কার্যতালিকা অপরিবর্তিত রাখা হবে এবং ক্রমানুসারে মামলার শুনানী ও আদেশ প্রেরণ নিশ্চিত করা হবে।

৪.৫: যে কোন দলিল নিবন্ধনের ক্ষেত্রে আইনজীবীর স্বাক্ষর বাধ্যতামূলক করা হবে।

৪.৬: নিম্ন আদালতে উমেদার প্রথা বাতিল করে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাধ্যমে শতভাগ দাপ্তরিক কার্য সম্পন্ন করা হবে।

৪.৭: সরকারী কর্মকতা, পুলিশ অফিসার ও ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের সমন্বয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত টিম গঠন করে মামলার তদন্ত করা হবে।

৪.৮: প্রথম অপরাধী (first offender) আদালতে আত্নসমর্পন করলে তাকে জামিন দেয়া এবং জামিনের অপব্যবহার না করলে মামলা নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত তাকে জামিনে রাখা যাবে।

৪.৯: সাধারণ কয়েদীদেরকে জরিমানার বিনিময়ে শর্ত সাপেক্ষে কারামুক্তি দেয়া হবে।

৪.১০: আদালতের কোন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে কোন ব্যক্তি বা সংগঠন বিক্ষোভ বা ধ্বংসাত্মক কর্ম করলে সংশ্লিষ্টদেরকে আদালত অবমাননার শাস্তি প্রদান করা যাবে।

৫. নির্বাচন সংক্রান্ত নীতি
৫.১: নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা, ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করবে। নির্বাহী বিভাগের কোন কর্মকর্তা নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।
৫.২: বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অধীন প্রথম শ্রেণীর মর্যাদায় নির্বাচন কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে যাদেরকে ইউনিয়ন পর্যায়ে পদায়ন করা হবে। পদোন্নতির মাধ্যমে তারা পরবর্তীতে উপজেলা, জেলা, ও বিভাগীয় পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করবেন। বিভাগীয় নির্বাচন কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে সরকারের প্রশাসন ক্যাডারের সমমানে উপ-সচিব, যুগ্ম সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব নিয়োগ দেয়া হবে। প্রেষণে অন্যান্য ক্যাডার থেকে বিচার, প্রকৌশল, নিরাপত্তা, প্রযুক্তি, তথ্য ইত্যাদি সম্পর্কিত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া যবে।

৫.৩: নির্বাচন কমিশনের প্রশাসনিক প্রধান হবেন চেয়ারম্যান এবং দাপ্তরিক প্রধান হবেন সচিব। চেয়ারম্যানের পদ শূণ্য হলে সচিবকে রাষ্ট্রপতি চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেবেন।

৫.৪: নির্বাচন কমিশন হবে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ। কমিশনের সকল নিয়োগ, পদন্নতি ও বদলী হবে কমিশনের নিজস্ব কমিটির মাধ্যমে।

৫.৫: ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান সংক্রান্ত যাবতীয় কার্য ইউনিয়ন পর্যায়ে সম্পন্ন করতে হবে। কোন নাগরিক যখনই ভোটার হওয়ার বয়সে উপনীত হবেন তিনি তখন ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে ভোটার হবেন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র গ্রহন করবেন। মৃত্যু, স্থান পরিবর্তন বা অন্য যে কোন প্রকার সংশোধন সংক্রান্ত কাজও ইউনিয়ন পর্যায়ে করা যাবে। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে সরবরাহকৃত তথ্য অনুসারে জাতীয় ভোটার তালিকা নবায়ন করতে হবে।

৫.৬: সকল প্রকার নির্বাচনে পোস্টারিং, মাইকিং ও দেয়াল লিখন নিষিদ্ধ করা হবে, তবে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত মাপে ও নির্দেশনায় সাদা-কালো প্রচারপত্র বিলি করা যাবে। প্রচারপত্রে প্রার্থীর জীবনবৃত্তান্ত ও সংক্ষিপ্ত কর্মপরিকল্পনা থাকতে হবে। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে ও সংখ্যায় মাইক ব্যবহার করে প্রচার সভা করা যাবে এবং নির্বাচনী বোর্ডে পোস্টার প্রদর্শন করা যাবে।

৫.৭: নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দল, রাজনীতিক ও জনপ্রতিনিধিদের কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রন করবে। কোন রাজনৈতিক দল, রাজনীতিক বা জনপ্রতিনিধি কর্তৃক সহিংস কর্মকান্ড, অসদাচরণ, দুর্নীতি, অনিয়ম ইত্যাদিজনিত কারণে যদি কোন নাগরিক বা দেশের সম্পদ ক্ষতিগ্রস্থ হয় তবে কেউ অভিযোগ আনুক বা না আনুক, সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউনিয়ন/পৌরসভা/ওয়ার্ড নির্বাচন কর্মকর্তা সেক্ষেত্রে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় নির্বাচন কর্মকর্তা ও বিভাগীয় চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের সচিব ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। জনপ্রতিনিধিদের ক্ষেত্রে বরখাস্তসহ রাজনৈতিক কর্মকান্ডের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং রাজনৈতিক দলের সংশ্লিষ্ট কমিটি ও রাজনীতিকদের ক্ষেত্রে শুধু রাজনৈতিক কর্মকান্ডের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে যা ছয় মাসের কম হবে না। এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে সংশ্লিষ্টদেরকে সর্বনিন্ম সাত দিন ও সর্বোচ্চ এক মাসের কারাদন্ড দেয়া হবে। এ ধরণের আদেশের বিরুদ্ধে পর্যায়ক্রমে উপজেলা, জেলা, বিভাগ ও নির্বাচন কমিশনে প্রতিকার চাওয়া যাবে। নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থা গ্রহন অন্যান্য আইনের কোন বিধানকে প্রভাবিত করবে না।

৬. নিয়োগ সংক্রান্ত নীতি
৬.১: সরকারী কর্ম কমিশনের নাম পরিবর্তন করে ‘জাতীয় কর্ম কমিশন’ করা হবে।

৬.২: বিশেষ নিয়োগ বিধি প্রতিপালন সাপেক্ষে সকল সরকারী, আধা সরকারী ও স্বায়ত্ব শাসিত প্রতিষ্ঠানের প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষক, প্রশিক্ষক ইত্যাদিসহ সকল জনবল নিয়োগ জাতীয় কর্ম কমিশনের মাধ্যমে হবে।

৬.৩: নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি কমিয়ে মেধার প্রতি বেশী গুরুত্ব দেয়া হবে।

৬.৪: জাতীয় কর্ম কমিশনের অধীন ইউনিয়ন/পৌরসভা/ওয়ার্ড, উপজেলা/থানা, জেলা/মহানগর ও বিভাগীয় পর্যায়ে নিয়োগ কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে।

৬.৫: চাকরির নিয়োগ পদ্ধতিতে কোন মৌখিক পরীক্ষা থাকবে না।

৭. দুর্নীতি দমন নীতি
৭.১: দুর্নীতি দমন কমিশনকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া হবে।

৭.২: কমিশন যে কোন ব্যক্তিকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার এবং ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারবে।

৭.৩: রাষ্ট্রপতি দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের মধ্য থেকে চেয়ারম্যান ও বিভাগীয় দুর্নীতি দমন কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে সচিব নিয়োগ করবেন। অন্যান্য সকল নিয়োগ হবে দুর্নীতি দমন কমিশনের নিজস্ব কমিটি দ্বারা।

৭.৪: কমিশনের প্রত্যেক দপ্তরে অভিযোগ বাক্স থাকবে এবং নাগরিকরা দুর্নীতি সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট তথ্য সেখানে প্রদান করবেন। অভিযোগ প্রাপ্তির পর অনতিবিলম্বে কমিশন তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করবে।

৭.৫: দুর্নীতি দমন কমিশনের অধীনে ইউনিয়ন পৌরসভা/ওয়ার্ড, উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে দুর্নীতি দমন কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে যাদের কাজ হবে যে কোন ধরণের দুর্নীতি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা, তদন্ত করা, মোবাইল কোর্টের সহযোগিতায় তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহন এবং প্রয়োজনে মামলা দায়ের করা।

৭.৬: প্রত্যেক জেলায় মূল আদালতের সাথে দুর্নীতি দমন ট্রাইব্যুনাল থাকবে।

৮. অর্থ ব্যবস্থাপনা নীতি
৮.১: হরতাল, অবরোধসহ অর্থনীতির জন্যে ক্ষতিকর সকল প্রকার কার্যকলাপ আইন করে নিষিদ্ধ করতে হবে।

৮.২: দায়িত্বপালনকালে কোন জনপ্রতিনিধি ও তার অধীনস্তদের বৃদ্ধি পাওয়া সম্পদ রাষ্ট্র বরাবর বাজেয়াপ্ত করতে হবে।

৮.৩: বেকার জনগোষ্টিকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জনশক্তিতে পরিণত করে আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা ও শিল্পায়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক মুক্তির পথ প্রশস্ত করতে হবে।

৮.৪: সরকারকে অবগত না করে বিদেশে কোন সম্পদ করলে বা গচ্ছিত রাখলে সমপরিমাণ অর্থ জরিমানার বিধান করতে হবে।

৮.৫: দেশকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। সে লক্ষ্যে জনশক্তি, শিল্প ও কৃষিপণ্য রপ্তানী, শান্তিমিশন, বিদেশী করিডোর প্রদান, পর্যটনসহ শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবায় বিদেশীদেরকে আকৃষ্ট করতে সব ধরণের পদক্ষেপ নিতে হবে।

৮.৬: অর্থ মন্ত্রনালয়ের অধীনে ইউনিয়ন/পৌরসভা/ওয়ার্ড, উপজেলা/থানা, জেলা/মহানগর ও বিভাগীয় পর্যায়ে অর্থ ও হিসাব কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে হবে। তারা রাজস্ব আদায়সহ সর্ব পর্যায়ের আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রতিবেদন তৈরী করবেন।

৮.৭: শিল্পায়ন ও ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে নিন্মোক্তভাবে আমদানী শুল্কহারের স্তর পূনর্বিন্যাস করতে হবে:
(ক) আমদানী করা গাড়ী/জাহাজের তুলনায় দেশীয় গাড়ী/জাহাজ নির্মাণ শিল্পের কাচাঁমাল আমদানীতে শুল্ক কমাতে হবে।

(খ) মূলধনী যন্ত্রপাতিতে ১.৫০% (বর্তমান হার ৩%), মৌলিক কাচাঁমালে ২.৫০% (বর্তমান হার ৫%) এবং মধ্যবর্তী কাচাঁমালে ৭.৫০% (বর্তমান হার ১২%) হারে শুল্ক নির্ধারণ করতে হবে।

(গ) প্রস্তুত পণ্যের চেয়ে কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক কমাতে হবে।

৯. ব্যাংক ব্যবস্থাপনা নীতি
৯.১: ঋণখেলাপী ও ঋণজালিয়াতীসহ ব্যাংকিং খাতের সব ধরণের অনিয়ম ও দুর্নীতিরোধে উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে ব্যাংক মনিটরিং কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে হবে।

৯.২: ব্যাংক ঋণ সংক্রান্ত বিচক্ষণ নীতিমালা প্রনয়ণ ও তত্ত্বাবধান ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।

৯.৩: ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদে কোন রাজনৈতিক ব্যক্তিকে নিয়োগ দেয়া যাবে না।

৯.৪: বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যবিধান করে ব্যাংক সুদের হার কমিয়ে আনতে হবে।

৯.৫: সর্বাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংকিং সেবা কার্যক্রম চালু করতে হবে এবং মোবাইল ব্যাংকিংসহ সকল ব্যাংকিং সেবায় সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয় করতে হবে।

১০. রাজস্ব নীতি সংক্রান্ত
১০.১: সকল ভোটারকে করের আওতায় আনায়ন সাপেক্ষে কর সনাক্তকরণ নম্বর প্রদান করতে হবে এবং উক্ত নম্বর জাতীয় পরিচয়পত্রে সন্নিবেশ করতে হবে। কর্মহীনদের ন্যূনতম একশত টাকা এবং কর্মজীবী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এক দিনের গড় আয়ের সমান বার্ষিক আয়কর প্রদান করতে হবে। কর্মহীন করদাতাদের জাতীয় পরিচয়পত্র সবুজ এবং কর্মজীবী করদাতাদের পরিচয়পত্র লাল রঙের করতে হবে। লক্ষাধিক টাকার করপ্রদানকারীদেরকে ’আর্থিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (Economic Important Person-EIP)’ হিসেবে অভিহিত করতে হবে এবং তাদেরকে সোনালী রঙের জাতীয় পরিচয়পত্র সরবরাহ করতে হবে।

ব্যাখ্যা: এখানে ব্যক্তি বলতে বেতন, ফি, মজুরী ইত্যাদির ওপর নির্ভরশীলদের বোঝাবে যারা কোন প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন না যেমন সব ধরণের চাকুরিজীবী, আইনজীবী, চিকিৎসক, পরামর্শক, শ্রমিক ইত্যাদি। প্রতিষ্ঠান বলতে ট্রেড লাইসেন্সধারী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও রেজিস্ট্রার্ড কোম্পানী। এসব প্রতিষ্ঠানের মালিকপক্ষকে ব্যক্তিগত কর প্রদান করতে হবে না। কিন্তু উক্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও তার/তাদের অন্য কোন আয়ের উৎস থাকলে সেটা ব্যক্তিগত আয় হিসেবে করের আওতায় আসবে। যেমন কোন চিকিৎসক যদি একই সাথে চাকরি ও ক্লিনিক পরিচালনা করেন, তবে তাকে চাকরিলব্ধ আয় ব্যক্তিগত করের আওতায় পড়বে এবং ক্লিনিকের আয়ের ওপর কর প্রযোজ্য হবে না। কেননা ক্লিনিক প্রাতিষ্ঠানিক করের আওতাভূক্ত, তবে ক্লিনিকে চাকরীরতরা ব্যক্তিগত আয়কর দিবেন। তেমনী একজন গ্রামে বসবাসকারী শিক্ষক বেতন ও সম্পত্তির আয়ের ওপর দ্বিবিধ কর দিবেন।

১০.২: ইউনিয়ন/পৌরসভা, ওয়ার্ড (মহানগরের ক্ষেত্রে), উপজেলা/থানা, জেলা/মহানগর ও বিভাগীয় পর্যায়ে রাজস্ব কর্মকর্তা (যদি না থাকে) নিয়োগ দিয়ে সব ধরণের রাজস্ব আদায় করতে হবে।

১০.৩: কর প্রদানের সাথে সামাজিক মর্যাদা ও রাষ্ট্রীয় সুবিধার সমন্বয় ঘটাতে হবে এবং বাণিজ্যিক/প্রাতিষ্ঠানিক লাইসেন্স বা ঋণ গ্রহন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কমিটির সদস্য হওয়া, বিদেশ ভ্রমন, নির্বাচন করা ইত্যাদি ক্ষেত্রে লাল পরিচয়পত্রধারী করদাতা হওয়ার শর্ত অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। জাতীয় সংকটে রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা প্রাপ্তিতে নাগরিকদের আর্থিক ও সামাজিক অবস্থান নির্ধারণে কর সনাক্তকরণ নম্বর ভূমিকা পালন করবে।

১১. শিল্প ও বাণিজ্য নীতি
১১.১: পণ্য ব্যবহার হ্রাসকল্পে দেশীয় উৎপাদন ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধন করা হবে।

১১.২: স্বল্প সুদে শিল্পঋণ প্রদান করা হবে এবং সংশ্লিষ্ট খাতে লোকসান হলে সুদ মওকুফ করা হবে।

১১.৩: পোষাক, চামড়া ও জাহাজ নির্মাণ শিল্পসহ সম্ভাবনাময়ী সকল শিল্পের উপকরণ আমদানীতে শুল্ক হার সহনীয় পর্যায়ে আনা হবে এবং সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করা হবে।

১১.৪: চামড়া সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে প্রান্তিক পর্যায়ে উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।

১১.৫: বস্ত্র মন্ত্রনালয়কে বিলুপ্ত করে শিল্প মন্ত্রনালয়ে একীভূত করা হবে।

১১.৬: আভ্যন্তরীণ বাজারে প্রতিটি দ্রব্য নির্ধারিত মূল্যে বিক্রী বাধ্যতামূলক করা হবে।

১১.৭: দেশীয় পণ্য ক্রয়ে বিদেশীদের আকৃষ্ট করতে সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে এবং এক্ষেত্রে চীন, জাপান, মালয়েশিয়া, ভারতসহ শিল্পোন্নত দেশগুলোর মডেল অনুসরণ করা হবে।

১১.৮: বাংলাদেশকে বিদেশী বাণিজ্যের অবাধ ক্ষেত্র তৈরী করা হবে। জেলায় জেলায় বিদেশীদের জন্যে ইপিজেড নির্মাণ করা হবে।

১১.৯: বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্যে অর্থনৈতিক করিডোরসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বন্দরগুলোর সাথে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণ করা হবে এবং বন্দরগুলোকে বাণিজ্য বান্ধব করে অধিক কার্যকর করা হবে।

১২. কৃষি, খাদ্য ও প্রাণীসম্পদ নীতি
১২.১: হিমাগারকে কৃষিশিল্প হিসেবে গণ্য করে বিদ্যুৎ বিলে ভর্তুকি দেয়া হবে।

১২.২: কম সুদে কৃষিঋণ প্রদান করা হবে এবং সংশ্লিষ্ট খাতে লোকসান হলে সুদ মওকুফ করা হবে।

১২.৩: মৎসচাষকে স্বাভাবিক করের আওতায় আনা, লবনাক্ততা রোধ, প্রাকৃতিক জলাশয় রক্ষা ও ক্ষুদ্র মৎসচাষীদের বিশেষ সুবিধা প্রদান করে যুগোপযোগী মৎস নীতিমালা প্রনয়ণ করা হবে।

১২.৪: কৃষিপণ্য ক্রয়ে বিদেশীদের আকৃষ্ট করতে সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে এবং এক্ষেত্রে থাইল্যান্ড, ভারতসহ কৃষিতে উন্নত দেশগুলোর মডেল অনুসরণ করা হবে।

১২.৫: পাট মন্ত্রনালয়কে বিলুপ্ত করে কৃষি মন্ত্রনালয়ে একীভূত করা হবে।

১২.৬: সব ধরণের খাদ্য নিরাপদ রাখতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

১২.৭: কৃষি মন্ত্রনালয়ের অধীনে ইউনিয়ন/পৌরসভা/ওয়ার্ড, উপজেলা/থানা, জেলা/মহানগর ও বিভাগীয় পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে যাদের কাজ হবে কৃষিতে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার এবং উন্নত সার, বীজ, কীটনাশক প্রাপ্তিসহ কৃষকদের সার্বিক সহায়তা প্রদান করা। কৃষিপণ্যের উৎপাদন, ভেজাল রোধ, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণে ভূমিকা রাখা; কৃষিপণ্য আমদানী-রপ্তানী, বাজার নিয়ন্ত্রন প্রভৃতি পর্যবেক্ষন ও উন্নয়নে ভূমিকা রাখা; কৃষি কাজে শিক্ষিত জনগোষ্ঠির অংশ গ্রহণ এবং বিদেশে কৃষক প্রেরণ প্রভৃতি ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখা; কৃষি ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের লক্ষ্যে মত বিনিময় সভা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, প্রশিক্ষণ, কর্মশালা ইত্যাদির আয়োজন করা।

১২.৮: খাদ্য মন্ত্রনালয়ের অধীনে ইউনিয়ন/পৌরসভা/ওয়ার্ড, উপজেলা/থানা, জেলা/মহানগর ও বিভাগীয় পর্যায়ে খাদ্য কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে যাদের কাজ হবে খাদ্য উৎপাদনে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, সংরক্ষণ, বাজারজাতকরণ, ভেজালরোধ, খাদ্যের আমদানি-রপ্তানী পর্যবেক্ষণ ও সহায়তা প্রদান, সব ধরণের খাদ্যের নিয়মিত গুণগত মান পরীক্ষা, বাজার নিয়ন্ত্রন, মূল্য নির্ধারণ এবং খাদ্য সংক্রান্ত জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে মত বিনিময় সভা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, প্রশিক্ষণ, কর্মশালা ইত্যাদির আয়োজন করা।

১২.৯: মৎস ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রনালয়ের অধীনে ইউনিয়ন/পৌরসভা/ওয়ার্ড, উপজেলা/থানা, জেলা/মহানগর ও বিভাগীয় পর্যায়ে মৎস ও প্রাণী পালন কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে যাদের কাজ হবে প্রশিক্ষণ, মৎস ও প্রাণীপালনে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, ঋণ, বিনিয়োগ, তথ্য প্রদান, বাজারজাতকরণ, মূল্য নির্ধারণ, খাদ্য ও ঔষধ প্রাপ্তি, চিকিৎসা প্রভৃতি বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সার্বিক সহযোগিতা করা।

১৩. গৃহায়ন নীতি
১৩.১: সবার জন্যে নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা নিতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

১৩.২: সরকারের নিকট থেকে অনুমোদন না নিয়ে কোথাও কোন বাড়ি-ঘর নির্মান করা যাবে না।

১৩.৩: শহর বা গ্রামে নতুন কোন বাড়ি স্থাপন করতে হলে বাড়ির যে কোন এক পার্শ্বে গাছ এবং অগ্নিনির্বাপক গাড়ী ঢোঁকার পথ থাকা বাধ্যতামূলক করা হবে।

১৩.৪: গৃহায়ন মন্ত্রনালয়ের অধীনে ইউনিয়ন/পৌরসভা/ওয়ার্ড, উপজেলা/থানা, জেলা/মহানগর ও বিভাগীয় পর্যায়ে গৃহায়ন কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে যাদের কাজ হবে অননুমোদিত বাড়ি-ঘর নির্মান ও ভূমিদস্যুতাসহ আবাসন খাতের যাবতীয় অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা রোধ এবং ঝুকিপূর্ণ বাড়ি-ঘর চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহন, বাড়ি-ঘরের নকসা অনুমোদন, সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্যে আবাসনের ব্যবস্থা করণ, সরকারী অবকাঠামোসমুহের নিয়ন্ত্রন ও সংরক্ষণ ইত্যাদি।

১৩.৫: গৃহহীনদের জন্য ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে এক বা একাধিক বহুতল ভবন নির্মাণ করে স্বল্পমূল্যে স্বল্পকালীন ও দীর্ঘমেয়াদী ভাড়া প্রদান করা হবে।

১৪. শিক্ষা নীতি
১৪.১: প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খেলার মাঠ, চিত্তবিনোদন, খোলামেলা পরিবেশ, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার ক্যান্টিন এবং চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।

১৪.২: স্কুল থেকে স্কুল ব্যাগ প্রদান ও তদারকি করতে হবে যেন বই, খাতা, কলম, পেন্সিল, খাবার ইত্যাদি মিলিয়ে ব্যাগের ওজন শিক্ষার্থীর নিজের ওজনের দশ শতাংশের বেশী না হয়।

১৪.৩: প্রতিটি ইউনিয়নে জাতীয় মানের শিক্ষা নিশ্চিত করা হবে এবং শিক্ষা গ্রহনে বিদেশ গমন রোধকল্পে দেশীয় শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধন করা হবে।

১৪.৪: উচ্চ মাধ্যমিক ও মাস্টার্স শিক্ষা রোহিত করে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা-এই তিনটি স্তরে শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হবে।

১৪.৫: মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্য পুস্তকে কর্ম ও পেশাভিত্তিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হবে যাতে মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপ্তির পর শিক্ষার্থীরা কোন কাজের সাথে জড়িত হওয়ার যোগ্যতা লাভ করে।

১৪.৬: মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষকদের মধ্যে আইনজীবী, চিকিৎসক, পুলিশ বা সেনা সদস্যদেরকে প্রেষণে নিয়োগ দেয়া হবে।

১৪.৭: স্কুল ড্রেসে পার্কে বা অন্যত্র অযৌক্তিক অবস্থান ছাত্র-ছাত্রীদের জন্যে নিষিদ্ধ করা হবে।

১৪.৮: অক্ষর জ্ঞান, ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, ভাষা জ্ঞান, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, ভূগোল, ইতিহাস, গণিত ইত্যাদি বিষয়কে প্রাথমিক পর্যায়ের পাঠ্য বিষয়ে এবং কম্পিউটার, গাড়ী চালনা, সেলাই, কুটির শিল্প, বাণিজ্য, কৃষি, মৎস চাষ, পশু পালন, খাদ্য উৎপাদন, মেকানিক্যাল, মুদ্রণ, ফ্যাশন ডিজাইন, আইন, চিকিৎসা, বিজ্ঞান, ইংরেজী ভাষা, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়কে মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্য বিষয়ে অন্তর্ভূক্ত করা হবে।

১৪.৯: প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে প্রতি ৩০ জন শিক্ষার্থীর জন্যে একজন শিক্ষক নিয়োগ করা হবে।

১৪.১০: প্রাথমিক ও মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠানের চুড়ান্ত পরীক্ষায় যদি কোন প্রতিষ্ঠানের ফলাফল দুইবার নিম্নবর্তি হয়, তবে উক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ওপর অর্থদন্ড অর্পন করা হবে এবং এই নিম্নবর্তি অবস্থান থেকে পূর্ববর্তী অবস্থান তৈরী না হওয়া অবধি প্রতি বছর এই দন্ড বলবত রাখা হবে। এই অর্থের পরিমাণ হবে শিক্ষকদের এক মাসের সম্মিলিত বেতনের অর্ধেক যা সব শিক্ষকদের বেতন থেকে কর্তন করা হবে।

১৪.১১: শিক্ষার্থীদের জন্য চিকিৎসা ফ্রি করা হবে।

১৪.১২: প্রতিটি ইউনিয়নে ‘ইউনিয়ন সরকারী মডেল স্কুল’, উপজেলায় ‘উপজেলা সরকারী মডেল স্কুল’ ও জেলায় ‘জেলা সরকারী মডেল স্কুল’ স্থাপন করা হবে। এসব স্কুলে ছেলেমেয়ে একসাথে পড়াশোনা করবে, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্যে আবাসন ব্যবস্থা থাকবে, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক উভয় শিক্ষা চালু থাকবে। প্রতিটি স্কুলের সাথে প্রতিবন্ধী কেন্দ্র, ক্রীড়া ও সাং®কৃতিক কেন্দ্র, স্কাউট, বিএনসিসি, শরীর চর্চা কেন্দ্র, মিলনায়তন, বিতর্ক কেন্দ্র, মসজিদ, উপসানালয়, চিকিৎসা কেন্দ্র, পাঠাগার, সংগ্রহশালা ইত্যাদি থাকবে।

১৪.১৩: শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের অধীনস্থ সকল শিক্ষক, প্রশিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ করবে জাতীয় কর্ম কমিশন, তবে তাদের বেতন, চাকরি বিধি, বদলি ও পদন্নতি নিয়ন্ত্রন করবে মন্ত্রনালয়।

১৪.১৪: প্রতিটি বিভাগে একটি শিক্ষা বোর্ড থাকবে। সাধারণ ও মাদ্রাসা শিক্ষা একই বোর্ড কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হবে। বোর্ডগুলি প্রাথমিক, মাধ্যমিক, মাদ্রাসা ও উচ্চ শিক্ষার সমাপনী পরীক্ষাগুলি গ্রহন করবে এবং সনদ প্রদান করবে।

১৪.১৫: সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসমুহের পরীক্ষাসমুহ অভিন্ন প্রশ্নপত্রে (ভিন্ন ভার্সনে) অনুষ্ঠিত হবে।

১৪.১৬: মাদ্রাসা শিক্ষার আধুনিকায়ন করা হবে এবং প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সাধারণ চাকরি প্রাপ্তিসহ শিক্ষা গ্রহনের ক্ষেত্রে মাদ্রাসা শিক্ষার সনদকে সাধারণ শিক্ষার সমমান সম্পন্ন করা হবে।

১৪.১৭: প্রত্যেক জেলায় একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে এবং কলেজ ও মাদ্রাসাগুলোতে উচ্চ শিক্ষা চালু করা হবে।

১৪.১৮: শিক্ষা গ্রহনে বিদেশীদের আকৃষ্ট করতে সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে এবং এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অষ্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, ভারতসহ শিক্ষা বাণিজ্যে উন্নত দেশগুলোর মডেল অনুসরণ করা হবে।

১৪.১৯: শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের অধীনে প্রথম শ্রেণীর মর্যাদায় শিক্ষা কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে যাদের কাজ হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার পরিবেশ দেখভাল করা, শৃংখলা রক্ষা, অবকাঠানো নির্মাণ, শিক্ষা সামগ্রী সরবরাহ, বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার অনুমতি প্রদান, দায়িত্বে অবহেলা ও অনৈতিক কর্ম জনিত কারণে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন ইত্যাদি। শিক্ষা কর্মকর্তাদের ইউনিয়ন পর্যায়ে পদায়ন করা হবে এবং পরবর্তীতে তারা পদন্নতির মাধ্যমে উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করবেন। বিভাগীয় শিক্ষা কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে উপ-সচিব, যুগ্ম সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে নিয়োগ দেয়া হবে।

১৪.২০:ইউনিয়ন/পৌরসভা/ওয়ার্ড পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তারা প্রাথমিক বিদ্যালয়সমুহের, উপজেলা/থানা পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তারা মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমুহের, জেলা/মহানগর পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তারা মহাবিদ্যালয়সমুহের এবং বিভাগীয় পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তারা বিশ্ববিদ্যালয়সমুহের পরিচালনা কমিটির সভাপতি (বেসরকারী প্রতিষ্ঠান হলে উপদেষ্টা) হবেন।

১৪.২১: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়কে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সাথে একীভূত করা হবে এবং একটি মাত্র শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমে সকল শিক্ষাকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

১৪.২২: শিক্ষা ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়ন, সংষ্কার, তদারকি, নিয়ন্ত্রন, দুর্নীতি রোধসহ সার্বিক বিষয়ে পরামর্শ গ্রহনের জন্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নেতৃত্বে একান্ন সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় শিক্ষা কমিশন গঠন করা হবে। জাতীয় শিক্ষা কমিশনে পদাধিকারবলে সদস্য হবেন বিশ্ববিদ্যালয়সমুহের উপাচার্যগণের প্রতিনিধি, শিক্ষা বোর্ডসমুহের চেয়ারম্যানবৃন্দ এবং শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সচিবের প্রতিনিধি। দুই বছর পর পর উক্ত কমিশন পূণর্গঠিত হবে। কমিশন বিভিন্ন বিষয়ে সরকারকে সুপারিশ প্রদান করবে।

১৫. স্বাস্থ্য নীতি
১৫.১: “ডাক্তার যেখানে, রোগী সেখানে” নীতির পরিবর্তে “রোগী যেখানে, ডাক্তার সেখানে” নীতির ভিত্তিতে প্রান্তিক পর্যায়ে জাতীয় মানের চিকিৎসার পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে। এ লক্ষ্যে প্রতিটি ইউনিয়ন, পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ডে উন্নত মানের হাসপাতাল এবং গ্রাম বা মহল্লাায় স্থানীয় স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এ সকল হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রতিটি বাড়ি ও কর্মস্থলে গিয়ে রোগীদের সেবা প্রদান করবেন।

১৫.২: সাধারণ চিকিৎসা শিক্ষা সম্প্রসারণ এবং দূর্যোগ মোকাবিলায় শিক্ষার্থীদেরকে তৈরীর লক্ষ্যে প্রতিটি মাধ্যমিক বা সমমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একজন চিকিৎসককে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হবে।

১৫.৩: শৃংখলা ও নৈতিকতা শিক্ষা সম্প্রসারণ এবং দূর্যোগ মোকাবিলায় চিকিৎসকদের তৈরীর লক্ষ্যে প্রতিটি হাসপাতালে একজন সেনা সদস্যকে চিকিৎসক হিসেবে প্রেষণে নিয়োগ দেয়া হবে।

১৫.৪: আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতালসহ প্রতিটি বিভাগে মেডিকেল ইউনিভার্সিটি এবং জেলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন করা হবে। জেলার সদর হাসপাতালগুলিকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করে জেলা মেডিকেল কলেজের সাথে একীভূত করা হবে। প্রতিটি মেডিকেল কলেজের অধীনে নার্সিং ও টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট থাকবে। হাসপাতালগুলি হবে জলাশয় ও গাছ বেষ্টিত পরিচ্ছন্ন পরিবেশে। হাসপাতালের ময়লা বা বর্জ পদার্থসমুহ নির্ধারিত স্থান থেকে প্রতি ছয় ঘণ্টা পর পর দূরবর্তী স্থানে অপসারণ করতে হবে। প্রত্যন্ত এলাকায় জাতীয় মানের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের হাসপাতালগুলোকে অত্যাধুনিক সব ধরণের যন্ত্রপাতিসহ উন্নত মান সম্পন্ন করা হবে। চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান হবে আবাসিক সুবিধা সম্বলিত এবং চিকিৎসক, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের কৃতিত্বপূর্ণ কাজের জন্য প্রনোদণা প্রদান ও রাষ্ট্রীয় পুরষ্কারে ভূষিত করা হবে।

১৫.৫: বেসরকারী চিকিৎসা শিক্ষা, সেবা ও ওষুধ প্রশাসনে যুগোপযোগী নীতিমালা প্রনয়ণ করে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে।

১৫.৬: উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ওষুধপ্রযুক্তি, উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থা এবং ফার্মাকোভিজিলেন্স ব্যবস্থা বা ওষুধের পর্যবেক্ষণ ও স্বতঃস্ফুর্ত নিরীক্ষা, প্রেসক্রিপশন পর্যালোচনা, ওষুধের রেকর্ড ও সমসাময়িক ডেটাবেইস তৈরীকে আধুনিকায়ন ও জোরালো করা হবে।

১৫.৭: দেশের কোন সরকারী হাসপাতালের কোন যান্ত্রিক ত্রুটি পরিলক্ষিত হওয়ার স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সচল করা হবে।

১৫.৮: প্লাাস্টিকের বোতলে পানি, ওষুধ, তেল, কোমল পানীয়, জুসসহ অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য বাজারজাতকরণ ও সরবরাহ নিষিদ্ধ করা হবে।

১৫.৯: স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের অধীনস্থ সকল শিক্ষক, চিকৎসক, প্রশিক্ষক, সেবক, সেবিকা, টেকনোলজিস্ট, টেকনিশিয়ান ও কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ করবে জাতীয় কর্ম কমিশন, তবে তাদের বেতন, চাকরি বিধি, বদলি ও পদন্নতি নিয়ন্ত্রন করবে মন্ত্রনালয়।

১৫.১০: স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের অধীনে প্রতিটি বিভাগে মেডিকেল বোর্ড থাকবে। বোর্ডগুলি যাবতীয় পরীক্ষা গ্রহন ও সনদ প্রদান করবে। সরকারী ও বেসরকারী চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমুহের পরীক্ষাসমুহ অভিন্ন প্রশ্নপত্রে (ভিন্ন ভার্সনে) অনুষ্ঠিত হবে।

১৫.১১: সকল চিকিৎসা অধিদপ্তর, পরিদপ্তর ইত্যাদি বিলুপ্ত করে সকল চিকিৎসা প্রশাসনকে মেডিকেল বোর্ডের আওতায় আনা হবে এবং বোর্ডের অধীনে বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করা হবে।

১৫.১২: চিকিৎসা গ্রহনে বিদেশীদের আকৃষ্ট করতে সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে এবং এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ভারতসহ চিকিৎসা বাণিজ্যে উন্নত দেশগুলোর মডেল অনুসরণ করা হবে।

১৫.১৩: কেন্দ্রীয় মেডিকেল বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত হওয়ার পূর্বে কোন প্রকার চিকিৎসা সামগ্রী, ঔষধ, মূল্য ও পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাবে না।

১৫.১৪: ডেন্টাল কলেজকে অনুষদে রূপান্তরিত করে মেডিকেল কলেজের সাথে একীভূত করা হবে।

১৫.১৫: চিকিৎসা ও চিকিৎসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করে চিকিৎসা ও চিকিৎসা শিক্ষা গ্রহনে বিদেশীদের আকৃষ্ট করতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা করতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

১৫.১৬: সেবা কার্যক্রমে সব ধরণের বহিরাগত ও দালালমুক্ত রাখা হবে।

১৫.১৭: স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের অধীনে ইউনিয়ন/পৌরসভা/ওয়ার্ড, উপজেলা/থানা, জেলা/মহানগর ও বিভাগীয় পর্যায়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে যাদের কাজ হবে চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোর চিকিৎসার পরিবেশ দেখভাল করা, শৃংখলা রক্ষা, অবকাঠানো নির্মাণ, চিকিৎসা সামগ্রী ও ঔষধ সরবরাহ, বেসরকারী চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার অনুমতি প্রদান, দায়িত্বে অবহেলা ও অনৈতিক কর্ম জনিত কারণে চিকিৎসা সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন ইত্যাদি।

১৫.১৮: সরকারের কাছ থেকে লাইসেন্স প্রাপ্তির পূর্বে এ্যালোপ্যাথিক, হোমিওপ্যাথিক, হারবাল বা কবিরাজিসহ কোন ধরণের চিকিৎসা শুরু কিংবা চিকিৎসা সামগ্রী, ঔষধ ইত্যাদি উৎপাদন বা বিক্রয় করা যাবে না।

১৫.২০: চিকিৎসা ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়ন, সংষ্কার, তদারকি, নিয়ন্ত্রন, দুর্নীতি রোধসহ সার্বিক বিষয়ে পরামর্শ গ্রহনের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নেতৃত্বে একান্ন সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় মেডিকেল কমিশন গঠন করা হবে। জাতীয় মেডিকেল কমিশনে পদাধিকারবলে সদস্য হবেন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়সমুহের উপাচার্যগণের প্রতিনিধি, দশটি সেরা সরকারী ও দশটি সেরা বেসরকারী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষগণ, দশটি সেরা সরকারী ও দশটি সেরা বেসরকারী হাসপাতালের প্রধানগণ এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সচিবের প্রতিনিধি। দুই বছর পর পর উক্ত কমিশন পূণর্গঠিত হবে। কমিশন বিভিন্ন বিষয়ে সরকারকে সুপারিশ প্রদান করবে।

১৬. পানি ব্যবস্থাপনা নীতি
১৬.১: নদীগুলোর নাব্যতা ধরে রাখা, দখলমুক্ত রাখা, ভাঙ্গন রোধ করা, সৌন্দর্য সাধন করা ও দূষণমুক্ত রাখতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

১৬.২: আন্তর্জাতিক নদী আইন অনুসারে দেশের আন্তর্জাতিক নদীগুলো সংরক্ষণ ও অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

১৬.৩: তিস্তাসহ সব অভিন্ন আন্তর্জাতিক নদীর পানি সূষ্ঠভাবে বন্টনে ফলপ্রসু উদ্যোগ গ্রহন করা হবে।

১৬.৪: আর্সেনিক ও লবনাক্ততা জনিত কারণে সংকটাপন্ন এলাকার প্রতিটি পরিবারের জন্য খাবার পানি সংকট দূর করা হবে।

১৬.৫: দেশের সব সরকারী নদী, জলাশয়, হ্রদ ইত্যাদি ফুল ও গাছে সুশোভিত করা হবে এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে মাছ চাষের উপযোগী করা হবে। ব্যক্তি মালিকানাধীন জলাশয়ও সুশোভিত রাখতে নীতিমালা প্রণয়ণ করা হবে।

১৬.৬: পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের অধীনে ইউনিয়ন/পৌরসভা/ওয়ার্ড, উপজেলা/থানা, জেলা/মহানগর ও বিভাগীয় পর্যায়ে পানি ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে। সবার জন্য নিরাপদ খাবার পানির ব্যবস্থাসহ সারা দেশের নদী ও জলাশয় সংরক্ষণ ও সৌন্দর্য বর্ধনে তিনি কাজ করবেন।

১৭. ভূমি ব্যবস্থাপনা নীতি
১৭.১: ভূমি মন্ত্রনালয়ের অধীনে ইউনিয়ন/পৌরসভা/ওয়ার্ড, উপজেলা/থানা, জেলা/মহানগর ও বিভাগীয় পর্যায়ে ভূমি কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে যাদের কাজ হবে ভূমি বরাদ্দ, হস্তান্তর, নিবন্ধন, ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি, সরকারী ভুমি রক্ষা, জরিপ, সীমানা নির্ধারণ এবং ভূমি ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের লক্ষ্যে মত বিনিময় সভা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, প্রশিক্ষণ, কর্মশালা ইত্যাদির আয়োজন করা।

১৭.২: স্থায়ীভাবে দেশত্যাগী কোন ব্যক্তির সম্পত্তি সরকার ছাড়া কোন ব্যক্তি বরাবর হস্তান্তর করা যাবে না।

১৭.৩: সকল খাস জমি উদ্ধার করে সীমানা চিহ্নিত করা হবে এবং ভূমিহীনদেরকে বিভিন্ন মেয়াদে ইজারা প্রদান করা হবে।

১৮. প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণ নীতি
১৮.১: শহরের প্রতিটি রাস্তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্যে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে উচ্চ প্রাচীর বেষ্টিত দূর্গন্ধমুক্ত ডাস্টবিন ও গণশৌচাগার স্থাপন করা হবে।

১৮.২: শহর বা গ্রামে নির্ধারিত স্থান ব্যতীত অন্য কোথাও ময়লা-আবর্জনা ফেললে জরিমানার বিধান করা হবে।

১৮.৩: সরকারী, আধা সরকারী ও শায়ত্ব শাসিত কোন ভবনে, দেয়ালে ও বৈদ্যুতিক খুটিতে লিখন, পোস্টারিং ও বিলবোর্ড বা ফেস্টুন স্থাপন নিষিদ্ধ করা হবে।

১৮.৪: বন্যপ্রাণী ও পাখীসহ যাবতীয় প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা, সৌন্দর্য বন্ধন, বনায়ন, পানি ব্যবস্থাপনা, নদীসহ সকল জলাশয় রক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

১৮.৫: প্রকৃতি ও পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের অধীনে ইউনিয়ন/পৌরসভা/ওয়ার্ড, উপজেলা/থানা, জেলা/মহানগর ও বিভাগীয় পর্যায়ে প্রকৃতি ও পরিবেশ কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে যাদের কাজ হবে প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণ নীতির যথাযথ বাস্তবায়ন করা এবং জনসচেনতা সৃষ্টিতে মত বিনিময় সভা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, প্রশিক্ষণ, কর্মশালা ইত্যাদির আয়োজন করা।

১৮.৬: জলবায়ুর পরিবর্তনরোধে ও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

১৮.৭: জলবায়ূর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্থদের স্বার্থ আদায়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

১৮.৮: জলবায়ূর পরিবর্তনে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনে অন্যান্য দেশের সাথে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহন করা হবে।

১৮.৯: জলবায়ূর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা হবে।

১৮.১০: জনগণকে আবহাওয়ার পূর্বাভাস ও করণীয় সম্পর্কে নিয়মিত পরামর্শ প্রদান করা হবে।

১৯. দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ নীতি
১৯.১: প্রতি বছর প্রতিটি ভবন পরীক্ষা করা হবে এবং ঝুকিপূর্ণ ভবন সংষ্ককারসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্যে সংশ্লিষ্ট ভবন মালিকদের নির্দেশ দেয়া হবে।

১৯.২: সিটি কর্পোশেন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন কর্তৃপক্ষের কাছে ঝড়, জলোচ্ছ্রাস, ভূমিকম্প, ধস, আগুন, শৈত্যপ্রবাহ, নিন্মচাপ, ক্ষরা, মঙ্গা প্রভৃতি রোধে পর্যাপ্ত সরঞ্জামাদি সংরক্ষিত রাখা হবে।

১৯.৩: কম্পিউটারের মাধ্যমে অবগত হয়ে দূর্ঘটনা ও অগ্নিকান্ডস্থলে পাঁচ মিনিটের মধ্যে ঘটনা স্থলে সেবাদানকারী সংস্থাকে পৌছাতে হবে।

১৯.৪: দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের অধীনে ইউনিয়ন/পৌরসভা/ওয়ার্ড, উপজেলা/থানা, জেলা/মহানগর ও বিভাগীয় পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে তাদের কাজ হবে দুর্যোগের সময় জনগণকে ত্রাণ প্রদানসহ সার্বিক সহায়তা করা।

১৯.৫: ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সকে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ে অধিভূক্ত করা হবে এবং দুর্যোগে সকল প্রকার ত্রাণ তাদের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে।

২০. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নীতি
২০.১: সকল প্রকার ডিজিটাল শিক্ষা উপকরণ শুল্কমুক্ত করা হবে।

২০.২: তথ্যপ্রযুক্তি খাতে রাজস্ব ও উন্নয়ন বাজেটের উল্লেখযোগ্য অংশ বরাদ্দ দেয়া হবে।

২০.৩: তথ্যপ্রযুক্তি পণ্যের আমদানীর উৎস কর সহনীয় করা হবে।

২০.৪: ইন্টানেটের মুসক প্রত্যাহার করা হবে।

২০.৫: ই-কমার্স লেনদেনের ওপর থেকে মুসক প্রত্যাহার করা হবে।

২০.৬: তথ্য-প্রযুক্তির উদ্যোক্তাদের অফিস স্থাপনে বাড়ি ভাড়ার ওপর মুসক প্রত্যাহার করা হবে।

২০.৭: ই-কমার্স সেবার ওপর শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহার করা হবে।

২০.৮: রাজস্ব আদায় ব্যবস্থায় ডিজিটাল প্রযুক্তি যুক্ত করা হবে।

২০.৯: ইন্টানেট ব্যান্ড উইডথের ওপর প্রযোজ্য ভ্যাট প্রত্যাহার এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে ভর্তুকি প্রদান করা হবে।

২০.১০: ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রয়োজনীয় উপকরণের ওপর ন্যূনতম শুল্ক ও কর নির্ধারণ করা হবে।

২০.১১: অনলাইন লেনদেন পদ্ধতি (পেপাল) চালু করা হবে।

২০.১২: ফ্রিল্যান্সারদের দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ প্রদানে বরাদ্দ দেয়া হবে।

২১. নিরাপত্তা নীতি
২১.১: আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের মূলত কাজ হবে শৃংখলা রক্ষা ও আসামী গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা।

২১.২: আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য বাংলাদেশের আইন-শৃংখলা বাহিনী যথাযথ ভূমিকা ও অবদান রাখবে এবং সেই লক্ষ্যে তাদেরকে সব ধরণের অস্ত্র-সরঞ্জামাদিসহ উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিতে সরকার সম্ভব সব ব্যবস্থা করবে।

২১.৩: প্রতিটি পাড়া মহল্লায় থাকবে সার্বক্ষনিক পুলিশী টহল।

২১.৪: কোন অপরাধ বা দূর্ঘটনার পনের মিনিটের মধ্যে যদি উক্ত স্থানে পুলিশ উপস্থিত হতে ব্যর্থ হন, তবে সংশ্লিষ্ট পুলিশ টিমকে শাস্তির সম্মূখীন করা হবে।

২১.৫: বৈদেশিক মিশনে বেশী বেশী আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের প্রেরণ করা হবে।

২১.৬: আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের চাকরির বয়স সীমা বৃদ্ধি করা হবে এবং অবসরপ্রাপ্তদের উন্নয়ন ও উৎপাদনমূখী কর্মে সম্পৃক্ত করা হবে।

২১.৭: আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদেরকে আরো বেশী ধর্মীয়, সামাজিক, নৈতিক ও মাববিক মূল্যবোধ সম্পন্ন করে গড়ে তুলতে তাদেরকে ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব, বিচারক, আইনজীবী, অধ্যাপক প্রভৃতি ব্যক্তিদের সমন্বয়ে পাঠদান করা হবে।

২১.৮: সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পুলিশ, বিজিবি, আনসার, গ্রাম পুলিশসহ সকল বাহিনীর সুযোগ সুবিধা নির্ধারণ করা হবে।

২১.৯: সমাজকে মাদকমুক্ত রাখতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন।

২১.১০: সেবা কার্যক্রমে সব ধরণের বহিরাগত ও দালালমুক্ত রাখা হবে।

২১.১১: সরকার নির্ধারিত ফি প্রদানসাপেক্ষে যে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পুলিশ বা আনসার বাহিনীর এক বা একাধিক সদস্যকে সার্বক্ষনিক বা সাময়িক নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত রাখতে পারবেন।

২১.১২: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের অধীনে ইউনিয়ন/পৌরসভা/ওয়ার্ড, উপজেলা/থানা, জেলা/মহানগর ও বিভাগীয় পর্যায়ে নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে যাদের কাজ হবে আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের কর্মকান্ড পর্যবেক্ষণ করা, ফৌজদারী অভিযোগ ও মামলা গ্রহন করা, মামলার তদন্ত পরিচালনা করা ইত্যাদি। নিরাপত্তা কর্মকর্তারা যে কোন ধরণের অপরাধ দমনে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। তাদের অধীনে আলাদা পুলিশ ফাঁড়ি ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকবে। তিনি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমেও তাৎক্ষনিক বিচারিক ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারবেন।

২২. প্রতিরক্ষা নীতি
২২.১: প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের মূলত কাজ হবে আত্মরক্ষামূলক। তাদেরকে দেশের আভ্যন্তরীণ শৃংখলা রক্ষা ও অপরাধ দমনে নিয়োজিত করা যাবে না, তবে প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবিলা, দূঃসাহসিক উন্নয়নমূলক কাজ ও প্রশিক্ষণে তাদেরকে সম্পৃক্ত করা যাবে।

২২.২: আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বাহিনী যথাযথ ভূমিকা ও অবদান রাখবে এবং সেই লক্ষ্যে তাদেরকে সব ধরণের অস্ত্র-সরঞ্জামাদিসহ উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিতে সরকার সম্ভব সব ব্যবস্থা করবে।

২২.৩: প্রতিরক্ষা সরঞ্জামাদি ও অস্ত্র ক্রয় সংক্রান্ত তথ্য জাতীয় সংসদে পেশ করা হবে।

২২.৪: রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে একটি জাতীয় প্রতিরক্ষা পরিষদ গঠন করা হবে।

২২.৫: সংসদীয় কমিটির সুপারিশ ও জাতীয় প্রতিরক্ষা পরিষদের অনুমোদন সাপেক্ষে দেশের সামর্থ্য ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর চাহিদা অনুসারে অস্ত্র ও সরঞ্জামাদী কেনা ও প্রশিক্ষণের বিধান করা হবে।

২২.৬: বৈদেশিক মিশনে বেশী বেশী প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের প্রেরণ করা হবে।

২২.৭: প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের চাকরির বয়স সীমা বৃদ্ধি করা হবে এবং অবসরপ্রাপ্তদের উন্নয়ন ও উৎপাদনমূখী কর্মে সম্পৃক্ত করা হবে।

২২.৮: প্রতিটি জেলায় সেনানিবাস স্থাপন করা হবে।

২২.৯: সামরিক বাহিনীর সদস্যরা কোন ব্যবসা-বাণিজ্য ও লাভজনক কাজে জড়িত হতে পারবেন না।

২২.১১: শৃংখলা ও নৈতিকতা শিক্ষা সম্প্রসারণ এবং দূর্যোগ মোকাবিলা ও স্বেচ্ছাসেবা প্রদানে শিক্ষার্থীদেরকে তৈরীর লক্ষ্যে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালে প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদেরকে যথাক্রমে শিক্ষক ও চিকিৎসক হিসেবে প্রেষণে নিয়োগ দেয়া হবে।

২২.১২: প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের আরো বেশী ধর্মীয়, সামাজিক, নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন করে গড়ে তুলতে তাদেরকে ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব, বিচারক, আইনজীবী, অধ্যাপক প্রভৃতি ব্যক্তিদের সমন্বয়ে পাঠদান করা হবে।

২৩. যোগাযোগ ব্যবস্থাপনা নীতি
২৩.১: বাংলাদেশের প্রতিটি রাস্তা পাকা করা হবে, যেন থানা শহর থেকে কোন ব্যক্তির গৃহে পৌছাতে কাঁচা রাস্তায় পা না দিতে হয়।

২৩.২: বাংলাদেশে ফেরি বা খেয়া নৌকার কোন ব্যবহার থাকবে না, প্রতিটি রাস্তার সংযোগস্থলে সেতু নির্মান করা হবে।

২৩.৩: দেশের কোন সেতু বা রাস্তার ভগ্নদশা পরিলক্ষিত হওয়ার তিন দিনের মধ্যে পূর্ণ সংষ্কারের ব্যবস্থা করা হবে।

২৩.৪: যোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের অধীনে ইউনিয়ন/পৌরসভা/ওয়ার্ড, উপজেলা/থানা, জেলা/মহানগর ও বিভাগীয় পর্যায়ে যোগাযোগ কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে যাদের কাজ হবে ঠিকাদারদের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে সব ধরণের রাস্তা ও সেতু নির্মাণ করা ও সুন্দর রাখা।

২৩.৫: পৃথক অধিদপ্তর/বিভাগ স্থাপন সাপেক্ষে সড়ক, রেল, নৌ ও বীমান যোগাযোগ ব্যবস্থাকে যোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের অধীনে একীভূত করা হবে।

২৩.৬: ফিটনেসবিহীন কোন গাড়ী রাস্তায় চলতে পারবে না।

২৩.৭: লাইসেন্সবিহীন কোন চালক রাস্তায় গাড়ী চালাতে পারবে না।

২৩.৮: যোগাযোগ মন্ত্রনালয় সব ধরণের পরিবহন নিয়ন্ত্রন করবে, নম্বর প্রদান করবে, ভাড়া নির্ধারণ করবে, গাড়ীর ফিটনেস সনদ দেবে, চালকদের লাইসেন্স প্রদান করবে, গাড়ী আমদানী-রপ্তানী নিয়ন্ত্রন করবে, গাড়ী চলাচলের রুট ও টোল নির্ধারণ করবে এবং সরকারী গাড়ীর হিসাব সংরক্ষণ করবে।

২৩.৯: যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক সব ধরণের যানবাহনের বীমা করা বাধ্যতামূলক করা হবে।

২৩.১০: পরিবহন খাতে ডাকাতি ও চাঁদাবাজিসহ সকল প্রকার অনিয়ম দুর করে নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করা হবে।

২৪. পররাষ্ট্র নীতি
২৪.১: বিশ্বমানবতা ও বিশ্ব সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় বিশ্বের কোন স্থানে মানবাধিকার লংঘন, দূর্বল ব্যক্তি বা গোষ্ঠির ওপর অমাববিক অত্যাচার, শোষণ বঞ্চণা, বৈষম্য পরিলক্ষিত হলে ভূখন্ড বা গোষ্টিগত অভ্যন্তরিণ বিষয় হিসেবে অভিহিত না করে এবং নিশ্চুপ নির্বিকার না থেকে বরং তার নিন্দা করা হবে; উপরন্ত সে সকল ক্ষেত্রে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

২৪.২: বিশ্বের কোথাও আন্তর্জাতিক আইন বা চুক্তি লংঘিত হলে সেখানে বাংলাদেশ তার নিন্দা করবে এবং আন্তর্জাতিক আইন বা চুক্তির বিধান প্রয়োগ করতে যথাযথ ভূমিকা রাখবে।

২৪.৩: শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর স্বেচ্ছাচারিতা রোধে গণতন্ত্রের বিশ্বায়ন (Globalization of Democracy) ঘটাতে বাংলাদেশ দূর্বল রাষ্ট্রগুলোর সমন্বয়ে যথাযথ ভূমিকা রাখবে।

২৪.৪: বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে মুসলিম বিশ্বের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখা হবে।

২৪.৫: সূর্যের আলো ও বাতাস থেকে নবায়নযোগ্য শুষ্ক জ্বালানী উৎপাদনে বিনিয়োগের জন্যে পরিবেশ ধ্বংসকারী শিল্পোন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে যথাযথ ক্ষতিপুরণ আদায়ে ভূমিকা রাখা হবে।

২৪.৬: সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগসমুহের অনুমতি ছাড়া কোন বিদেশী ব্যক্তি দেশের কোন দপ্তর বা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করতে পারবেন না।

২৪.৭: উন্নয়ন সহযোগী রাষ্ট্র ও সংস্থাগুলোর সঙ্গে সুদৃঢ় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্থাপন করা হবে।

২৪.৮: বিদেশ গমনেচ্ছুকদের ভিসা-পাশপোর্ট প্রাপ্তি সহজকরণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

২৪.৯: আন্তর্জাতিক রাষ্ট্রীয় সংগঠনগুলোতে নেতৃত্ব সৃষ্টির লক্ষ্যে বলিষ্ঠ ভূমিকা গ্রহন করা হবে।

২৪.১০: দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তিসমুহের বাস্তবায়নে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

২৪.১১: জনশক্তি ও পণ্য রপ্তানী এবং শান্তি মিশনে আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্য প্রেরণের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা।

২৪.১২: সব ধরণের আমদানী সহজলভ্য করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

২৪.১৩: দেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং পর্যটন, শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবা গ্রহনে বিদেশীদের উদ্বুদ্ধ করতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

২৪.১৪: সীমান্ত সমস্যাসহ আন্তর্জাতিক সব ধরণের বিরোধ নিষ্পত্তিতে দেশের পক্ষে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখা হবে।

২৫. বিদ্যুৎ নীতি
২৫.১: দেশের প্রতিটি পরিবার ও প্রতিষ্ঠানে সার্বক্ষনিক বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে।

২৫.২: আন্তর্জাতিক বাজার বিবেচনায় নিয়ে বিদ্যুতের মূল্য কমানো হবে।

২৫.৩: দেশে জলবিদ্যুৎ তৈরীর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

২৫.৪: দেশীয় কয়লা উত্তোলন করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

২৫.৫: দেশের প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ উৎপাদন নিশ্চিত করতে জ্বালানীসহ সব ধরণের চাহিদা পুরণ করতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে এবং বিদ্যুতের বৈদেশিক নির্ভরতা শূণ্যে আনা হবে।

২৫.৬: বিদ্যুতের সকল প্রকার চুরি ও অপচয় রোধ করা হবে।

২৫.৭: বিদ্যুৎ খাতের আয়-ব্যায়ের হিসাব সংরক্ষণ করা হবে।

২৫.৮: বিদ্যুৎ খাতকে লাভজনক করে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি করা হবে।

২৫.৯: সেবা কার্যক্রমে সব ধরণের বহিরাগত ও দালালমুক্ত রাখা হবে।

২৫.১০: বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর অব্যবস্থাপনা দুর করা হবে।

২৫.১১: সব বিতরণ লাইন সংষ্কার ও সম্প্রসারণ করা হবে।

২৫.১২: ট্রান্সফরমারগুলো সব সময় ক্রুটিমুক্ত রাখা হবে।

২৫.১৩: সকল সরকারী ও বেসরকারী বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ও ব্যয়ের তথ্যসহ উৎপাদন ক্ষমতা, মালিকানা, উৎপাদনকারী সংস্থার নাম, উৎপাদন শুরুর সময়, বৈদেশিক অর্থায়ন, নির্মানকারী প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণ করা হবে।

২৫.১৪: ইউনিয়ন/পৌরসভা/ওয়ার্ড, উপজেলা/থানা, জেলা/মহানগর ও বিভাগীয় পর্যায়ে বিদ্যুৎ কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে। তারা প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ও পরিবারে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করবেন, বিল প্রদান ও গ্রহন করবেন এবং ভূতুড়ে বিল ও মিটার রিডারদের অনিয়ম দুরীকরণসহ সকল প্রকার গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করবেন।

২৬. জ্বালানী নীতি
২৬.১: প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ও পরিবারকে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ করা হবে।

২৬.২: আন্তর্জাতিক বাজার বিবেচনায় নিয়ে গ্যাস বিল কমানো হবে।

২৬.৩: প্রতিটি ইউনিয়নকে গ্যাসের আওতায় আনা হবে।

২৬.৪: সূর্যের আলো ও বাতাসসহ বিভিন্ন উৎস থেকে নবায়নযোগ্য শুষ্ক জ্বালানী উৎপাদনের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

২৬.৫: প্রতিটি গ্যাস ব্যবহারকারীর আলাদা মিটার থাকবে এবং স্বল্পমূল্যে আধুনিক সিলিন্ডার প্রদানের মাধ্যমে প্রতিটি পরিবারকে গ্যাস প্রদান করা হবে।

২৬.৬: পাশ্ববর্তী দেশগুলোর সাথে জ্বালানী নিরাপত্তা বিষয়ক সম্পর্ক স্থাপন করা হবে।

২৬.৭: গ্যাসের সকল প্রকার চুরি ও অপচয় রোধ করা হবে।

২৬.৮: জ্বালানী খাতের আয়-ব্যায়ের হিসাব সংরক্ষণ করা হবে।

২৬.৯: জ্বালানী খাতকে লাভজনক করে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি করা।

২৬.১০: সেবা কার্যক্রমে সব ধরণের বহিরাগত ও দালালমুক্ত রাখা।

২৬.১১: সব ধরণের মজুদ গ্যাসের উত্তোলনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

২৫. গণমাধ্যম ও তথ্য নীতি
২৫.১: তথ্য মন্ত্রনালয়ের অধীনে ইউনিয়ন/পৌরসভা, উপজেলা/থানা, জেলা/মহানগর ও বিভাগীয় পর্যায়ে তথ্য কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে তাদের কাজ হবে বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী সংস্থা, গণমাধ্যম এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগে তথ্য প্রদান এবং জনগণকে বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য সরবরাহ করা।

২৫.২: সাংবাদিক, প্রেস শ্রমিক ও কর্মচারীদের জন্য নবম ওয়েজ বোর্ড গঠন করা হবে।

২৫.৩: মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদেরকে সাংবাদিকতার পাঠ ও প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে যাতে খন্ডকালিন চাকরি হিসেবে শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকতায় অংশ গ্রহন করতে পারে।

২৫.৪: সরকারের সহযোগী হিসেবে সংবাদ মাধ্যমকে বিকশিত করা হবে যাতে বাংলাদেশের প্রতিটি এলাকায় আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি, অফিস ব্যবস্থাপনা, প্রতিষ্ঠান পরিচালনা ইত্যাদি সাংবাদিকরা পর্যবেক্ষণ ও সরকারের প্রতি সুপারিশ করতে পারেন।

২৫.৫: সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে সংবাদ মাধ্যমকে ভর্তুকি এবং সাংবাদিকদেরকে সুরক্ষা প্রদান করা প্রদান করা হবে।

২৬. ধর্ম চর্চা ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায় সংক্রান্ত নীতি
২৬.১: বাংলাদেশের সকল উপজাতি, ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও ক্ষুদ্র্র নৃগোষ্ঠিদের সর্বক্ষেত্রে সমান অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা করা হবে।

২৬.২: ধর্মভিত্তিক সামাজিক সমন্বয় সৃষ্টি ও স্বাধীনভাবে সব ধর্ম চর্চার অনুকুল পরিবেশ তৈরী করতে পৃষ্টপোষকতা প্রদান করা হবে।

২৬.৩: ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আদলে হিন্দু ফাউন্ডেশন, খৃষ্টান ফাউন্ডেশন, বৌদ্ধ ফাউন্ডেশনসহ দেশের প্রত্যেক ধর্মভিত্তিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা হবে। মসজিদ ও উপনানালয়গুলো পরিচালনার ২৫% খরচ এ সকল ফাউন্ডেশনগুলোর মাধ্যমে সারা দেশে বরাদ্দ করা হবে। অন্যান্য খরচ নির্বাহ করা হবে জনগণের দানের টাকায়। ধর্মীয় খাতে সমুদয় বরাদ্দ বন্টন করা হবে ধর্মের অনুসারীদের আনুপাতিক হারের ভিত্তিতে; অর্থাৎ দেশের মোট জনসংখ্যার ৮০% মুসলিম হলে ইসলামিক ফাউন্ডেশন পাবে মোট বরাদ্দের ৮০%, ৮% হিন্দু হলে হিন্দু ফাউন্ডেশন পাবে মোট বরাদ্দের ৮%।

২৬.৪: সরল ও অনাড়ম্বর জীবন যাপনে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে বৈদেশিক বিলাসী দ্রব্যের ব্যবহার সীমিত করতে আইন প্রণয়ন করা হবে।

২৬.৫: প্রত্যেক মসজিদ ও উপসালয়ের সাথে পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করা হবে।

২৬.৬: প্রত্যেক ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে সরকারী কবরস্থান, শ্মশান, সমাধিস্থল ইত্যাদি নির্মাণ করা হবে।

২৬.৭: প্রতিটি ইউনিয়নে একটি মসজিদ এবং প্রতিটি জেলায় একটি মন্দির, একটি গীর্জা ও একটি বৌদ্ধ উপসনালয় জাতীয়করণ করা হবে। এগুলোর যাবতীয় নির্বাহ ব্যয় সরকার বহন করবে। জাতীয়করণকৃত মসজিদগুলোতে ডাবল শিফ্ট স্টাফ থাকবেন। ফজর থেকে জোহর ও আসর থেকে এশা পর্যন্ত আলাদা ঈমাম, মুয়াজ্জিন ও সহকারীগণ থাকবেন। স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন শ্রেণী পেশায় জড়িত আলেমদের মধ্য থেকে তাদের নিয়োগ দেয়া হবে। তারা কেউ মসজিদে বসবাস করতে পারবেন না এবং মসজিদে সেবাদানকে চাকরি হিসেবে নিতে পারবেন না। তাদেরকে সম্মানী দেয়া হবে, তবে তাদের জীবিকার জন্য অন্য কোন কাজের সাথে জড়িত থাকতে হবে।

২৬.৮: ধর্ম মন্ত্রনালয়ের অধীনে ইউনিয়ন/পৌরসভা/ওয়ার্ড, উপজেলা/থানা, জেলা/মহানগর ও বিভাগীয় পর্যায়ে ধর্ম কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে তাদের কাজ হবে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়ন, উপাসানালয়, মাজার, পীরের দরগাহ, মসজিদ, মন্দির, গীর্জাসহ সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যায়ের হিসাব সংরক্ষণ এবং জনগণের নৈতিক মানোন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহন করা। তারা সংখ্যালঘুদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা ছাড়াও সব মসজিদ, মন্দির, উপসানালয়, সরকারী কবরস্থান ও শ্মশান পরিচালনা কমিটির সভাপতি হবেন। এছাড়াও তারা জাকাত ও বিভিন্ন ধরণের দান গ্রহন করে ফান্ড গঠন করে শরীয়ত মোতাবেক বন্টন করবেন। হজ্জ ও ওমরা পালনকারীরা তাদের কাছে দরখাস্ত করবেন এবং তাদের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।

২৬.৯: ইসলাম ধর্মের অপব্যবহার, অপব্যাখ্যা, শিরক, বিদআত, ব্যবসা, ভন্ড পীর/কবিরাজ/চিকিৎসক ইত্যাদি রোধকল্পে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালকের নেতৃত্বে একান্ন সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় শরীয়া কাউন্সিল গঠন করা হবে। জাতীয় শরীয়া কাউন্সিলের অনুমোদন ব্যতীত ইসলামের নামে কোন পীর, কবিরাজ বা চিকিৎসক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন না।

২৭. নারী ও শিশু নীতি
২৭.১: দৈনন্দিন জীবনে ও অভিনয়ে যৌন উত্তেজনা সৃষ্টিকারী অশালীন পোষাক নিষিদ্ধ করে আবহমান বাংলার সংষ্কৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ পোষাক পরতে নারীদের উৎসাহিত করা হবে।

২৭.২: শালিনতা বজায় নারীদেরকে পুরুষদের সাথে সকল প্রকার পেশাগত কাজ করার পরিবেশ তৈরী করা হবে।

২৭.৩: ‘পোষাক নীতি’ প্রণয়ণের মাধ্যমে সহনীয় ও গ্রহণযোগ্য পোষাক তৈরী ও ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে।

২৭.৪: পার্কগুলিতে শালিনভাবে নারী-পুরুষের অবস্থান নিশ্চিত করা হবে।

২৭.৫: শিশু ও গর্ভবতী নারীদের সকল প্রকার চিকিৎসা ফ্রি করা হবে।

২৭.৬: জন্মের তিন মাসের মধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগ প্রতিটি শিশুর পরিচয়পত্র প্রদান করবে। শিশু পরিচয়পত্রে শিশুর ছবি, রক্তের গ্রুপ, জন্ম তারিখ, জন্ম স্থান, পিতা-মাতার নাম-ঠিকানা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা থাকবে। প্রতি বছর পরিচয়পত্র নবায়ন করতে হবে। পরিচয়পত্র ধারণকারী শিশুদেরকে সরকারী সুযোগ-সুবিধা প্রদানে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। শিশু পরিচয়পত্রের নম্বরেই পরবর্তীতে জাতীয় পরিচয়পত্র হবে।

২৭.৭: শিশুদের যৌন হয়রানী ও দৈহিক শাস্তিরোধে আইন প্রনয়ণ করা হবে।

২৭.৮: প্রান্তিক শিশুদের নিজস্ব মাতৃভাষা ও প্রতিবন্ধি শিশুদের সাংকেতিক ভাষায় শিক্ষা গ্রহনের সকল সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।

২৭.৯: শিশুদের জন্য আলাদা অধিদপ্তর ও শিশু ন্যায়পাল প্রতিষ্ঠা করা হবে।

২৮. ক্রীড়া ও সংস্কৃতি উন্নয়ন নীতি
২৮.১: অপসাংষ্কৃতিক আগ্রাসন রোধকল্পে গণমূখী দেশীয় সংষ্কৃতি চর্চার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে।

২৮.২: সর্বক্ষেত্রে অশ্লিল পোষাক পরা নিষিদ্ধ করা হবে।

২৮.৩: পাঠ্যপুস্তকে ও পাবলিক প্লেসের সাইন বোর্ড, ব্যানার, বিলবোর্ড, প্রচারপত্র ইত্যাদিতে এবং গণমাধ্যমে নিয়মিতভাবে কোন রকম ভুল বা অননুমোদিত বানান ব্যবহার করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষকে জরিমানা করা হবে।

২৮.৪: ইউনিয়ন/পৌরসভা/ওয়ার্ড, উপজেলা/থানা, জেলা/মহানগর ও বিভাগীয় পর্যায়ে ক্রীড়া ও সংষ্কৃতি কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে। তারা বিভিন্ন চিত্তবিনোদন কেন্দ্র পরিচালনা করবেন। চিত্তবিনোদন কেন্দ্রগুলোতে শিশুপার্ক, চিড়িয়াখানা, যাদুঘর, সংগ্রহশালা, পাঠাগার, ব্যায়ামাগার, মিলনায়তন, পুকুর, খেলার মাঠ, পিকনিক ষ্পট এবং বিভিন্ন ধরণের ফুল, ফল ও ঔষধী গাছ ইত্যাদি থাকবে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে তারা ক্রীড়া ও সাং®কৃতি প্রতিযোগিতার আয়োজন করবেন।

২৮.৫: সামাজিক অবক্ষয় সৃষ্টিকারী বিদেশী বিনোদন চ্যানেলসমুহ বন্ধ করা হবে।

২৮.৬: সব ধরণের ক্রীড়ায় আন্তর্জাতিক মানে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

২৯. মুক্তিযুদ্ধ ও ইতিহাস চর্চা নীতি
২৯.১: মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস চর্চার পথ প্রশস্থ করা হবে।

২৯.২: মুক্তিযুদ্ধে প্রশিক্ষণ নিয়ে যারা সশস্ত্র যুদ্ধ করেছিলেন তাদেরকে মুক্তিযোদ্ধা এবং সহায়তাকারীদের সহযোদ্ধা হিসেবে পরিগণিত করে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দান ও সুবিধা প্রদান করা হবে। যানবাহন ও হাসপাতালসহ যে কোন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে তাঁরা বিনামূল্যে সেবা পাবেন। ভ্রমনে তাঁরা সার্কিট হাউজ, ডাকবাংলো ও রেস্ট হাউজ ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়াও যে কোন সরকারী পণ্য তারা অর্ধেক মূল্যে গ্রহন করতে পারবেন।

২৯.৩: মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও নিহতদের সঠিক সংখ্যা নিরুপণ করা হবে এবং তাদের পরিবারসমুহকে উপযুক্ত সম্মান ও সুবিধা প্রদান করা হবে।

২৯.৪: প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী ও সংগঠকদের তালিকা প্রস্তুত এবং আইনুগ ভাতা, সুবিধা ও সনদ প্রদান নিশ্চিত করা হবে।

২৯.৫: মুক্তিযুদ্ধে নিহত ও নির্যাতিত সাধারণ জনগণের সংখ্যা নির্ণয় এবং আইনুগ ভাতা, সুবিধা ও সনদ প্রদান নিশ্চিত করা হবে।

২৯.৬: মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্য চিত্র, দলিলাদি, স্মৃতিচিহ্নসহ যাবতীয় প্রমানাদি সংরক্ষণ এবং মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত বিশেষ দিবসসমুহ পালন করা হবে।

৩০. সমাজ সেবা ও সমবায় নীতি
৩০.১: নিবন্ধিত সকল বেকার প্রতিবন্ধি তাদের পারিবারিক মর্যাদা অনুসারে ব্যক্তিগত জীবন যাপনের জন্যে সরকার নির্ধারিত নিয়মিত ভাতা প্রাপ্ত হবেন।

৩০.২: উচ্চ শিক্ষিত (স্নাতক) নিবন্ধিত বেকার যুবকরা সরকারী চাকুরি হওয়ার শেষ বয়স পর্যন্ত সরকার নির্ধারিত পরিমাণে মাসিক বেকার ভাতা পাবেন। এই পরিমাণ হবে মধ্যম মানের ত্রিশ কেজি চাউলের মূল্যমানের সমান। কোন শিক্ষার্থী এই সুবিধার আওতায় আসবেন না।

৩০.৩: সমাজ কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের অধীনে ইউনিয়ন/পৌরসভা/ওয়ার্ড, উপজেলা/থানা, জেলা/মহানগর ও বিভাগীয় পর্যায়ে সমাজ সেবা কর্মকর্তা নিয়োগ দেয় হবে যাদের কাজ হবে সরকারী ত্রাণ, ভাতা ও বিভিন্ন সহযোগিতা প্রদান করা, ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধে সঙ্গতিহীনদের মাসিক ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করা, প্রতিবন্ধীদের নিকটস্থ প্রতিবন্ধী কেন্দ্রে পড়াশোনা এবং প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে পূণর্বাসনের ব্যবস্থা করা।

৩০.৪: যে কোন ব্যক্তি তার দৈনন্দিন নাগরিক সেবা সংক্রান্ত অভিযোগ স্থানীয় সমাজ সেবা কার্যালয়ে দায়ের করবেন। উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অনতিবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহনের সুপারিশ করা হবে।

৩০.৫: সামাজিক অবদান বা কৃতিত্বপূর্ণ কর্মের স্বীকৃতি স্বরূপ সমাজ সেবা কার্যালয় গুরুত্বপূর্ণ অরাজনৈতিক ব্যক্তিদেরকে তাদের নৈতিকতা, সততা, চরিত্র ও আচরণ বিবেচনা করে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বার্ষিক এসআইপি (Socially Important Person) সনদ’ প্রদান করবেন। এই পুরষ্কার প্রাপ্তির সনদ তাদের চাকরি প্রাপ্তি বা পদোন্নতি, বিবাহ, ব্যবসার লাইসেন্স প্রাপ্তি, বিদেশ গমন প্রভৃতি ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। এসআইপিরা বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে দাওয়াত পাবেন এবং বিভিন্ন মামলা ও সরকারী তদন্ত টিমে তারা সদস্য হবেন। তবে তারা যদি কোন অনৈতিক কাজে জড়িত হন বা ফৌজদারী মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হন তবে তাদের সনদ সরকার প্রত্যাহার করতে পারবেন। কোন ব্যক্তি একাধিকবার এসআইপি নিযুক্ত হলে তিনি মর্যাদাগতভাবে অগ্রাধিকার পাবেন। বিভিন্ন শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটিতে সদস্য হিসেবে একজন এসআইপি রাখা বাধ্যতামূলক করা হবে।
৩০.৬: সমবায় মন্ত্রনালয়ের অধীনে ইউনিয়ন/পৌরসভা/ওয়ার্ড, উপজেলা/থানা, জেলা/মহানগর ও বিভাগীয় পর্যায়ে সমবায় কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে যাদের কাজ হবে সমবায় সমিতিগুলোকে নিয়ন্ত্রন করা, আইনের আওতায় সমিতি ও সামাজিক সংগঠনের অনুমতি দেয়া, আয়-ব্যায়ের হিসাব সংরক্ষণ করা এবং জনসচেনতা সৃষ্টিতে মত বিনিময় সভা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, প্রশিক্ষণ, কর্মশালা ইত্যাদির আয়োজন করা।

৩০.৭: ছিন্নমূল বা পথশিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুনর্বাসন কেন্দ্র পরিচালনা করা হবে।

৩১. প্রবাসী কল্যাণ নীতি
৩১.১: প্রবাসীদের স্বার্থরক্ষা, অধিকার প্রতিষ্ঠা ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ সৃষ্টিতে সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহন হবে।

৩১.২: প্রবাসীদের আইনী সহায়তাসহ সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদান হবে।

৩১.৩: প্রবাসীদের নিরাপদ অর্থ প্রেরণ নিশ্চিত করা এবং বৈদেশিক আয়ের হিসাব সংরক্ষণ করা হবে।

৩১.৪: প্রবাসীদের ভিসা-পাশপোর্ট সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

৩১.৫: সেবা কার্যক্রমে সব ধরণের বহিরাগত ও দালালমুক্ত রাখা।

৩১.৬: প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের অধীনে ইউনিয়ন/পৌরসভা/ওয়ার্ড, উপজেলা/থানা, জেলা/মহানগর ও বিভাগীয় পর্যায়ে প্রবাসী কল্যাণ কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে প্রবাসীদের সব ধরণের সহযোগিতা করা হবে। এই সহযোগিতার মধ্যে থাকবে প্রবাসীদের ভিসা-পাশপোর্ট সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন, অর্থ প্রেরণ, বিনিয়োগ, তাদের ব্যাপারে তথ্য সংরক্ষণ করা, তাদের সার্বিক সহযোগিতা দিতে সংশ্লিষ্ট বিভাগে যোগাযোগ রাখা, প্রবাসে যাওয়ার ব্যাপারে প্রার্থীদের সহযোগিতা করা ইত্যাদি।

৩২. পল্লী ও নগর উন্নয়ন নীতি
৩২.১: স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা প্রচলিত অবস্থায় থাকবে, তবে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাজ হবে শুধুমাত্র প্রশাসনকে তদারকি করা। সেবামূলক যাবতীয় কর্মকান্ড সরকারী কর্মচারীরা সম্পন্ন করবেন।

৩২.২: সেবা কার্যক্রমে সব ধরণের বহিরাগত ও দালালমুক্ত রাখা হবে।

৩২.৩: রাজধানী, বিভাগ, জেলা ও থানা শহরগুলি মনোরম, সুস্নিগ্ধ, সাজানো-গোছানো ও ছিমছাম করে করে গড়ে তোলা হবে।

৩২.৪: প্রতিটি শহরের দৈনন্দিন নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা, উন্নত শিক্ষা, চিত্তবিনোদণ ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য সুবিধা, গণপরিবহন ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে।

৩২.৫: প্রতিটি শহরের ফুটপাথগুলি অবমুক্ত করা হবে এবং ফুটপাথ দিয়ে সকল প্রকার যান চলাচল নিষিদ্ধ করা হবে।

৩২.৬: শপিং মলগুলোতে গাড়ি পার্কিং ও অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করা হবে।

৩২.৭: প্রশাসনের সকল স্তরের কর্মকান্ড সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান বা মেয়রদেরকে অবগত করতে হবে এবং তাদের অনুস্বাক্ষর নিয়ে ইউনিয়ন/পৌরসভা/ওয়ার্ড, উপজেলা/থানা, জেলা/মহানগর ও বিভাগীয় প্রশাসনের কর্মকান্ডের প্রতিবেদন উচ্চতর পর্যায়ে প্রেরণ করতে হবে।

৩২.৮: ইউনিয়ন/পৌরসভা/ওয়ার্ড, উপজেলা/থানা, জেলা/মহানগর ও বিভাগীয় পর্যায়ে নির্মাণ কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে যাদের কাজ হবে ঠিকাদারদের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে সরকারী, আধা সরকারী ও স্বায়ত্ব শাসিত প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় অবকাঠামো নির্মাণ করা।

৩৩. পর্যটননীতি
৩৩.১: কক্সবাজারসহ বাংলাদেশের পর্যটনপ্রধান এলাকাগুলোতে বিশ্বমানের আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।

৩৩.২: দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে বাংলাদেশের পর্যটন নিয়ে প্রতিবছর রাজধানীতে আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলার আয়োজন করা।

৩৩.৩: প্রতিটি পর্যটন কেন্দ্রকে বিমান ও রেল যোগাযোগের আওতায় আনা হবে।

৩৩.৪: পর্যটন কেন্দ্র গুলির ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নতি সাধন করা হবে।

৩৩.৫: পর্যটন এলাকার হোটেল ও মোটেলের ভাড়া ও পরিবেশ নিয়ন্ত্রন করা হবে।

৩৩.৬: পর্যটন এলাকার নিরাপত্তা ও সেবা আন্তর্জাতিক মানে উন্নিত করা হবে।

৩৩.৭: প্রতিটি পর্যটন কেন্দ্রের সাথে পুলিশফাঁড়ি, ক্লিনিক, ফুডকোর্ট, সিনেপে¬ক্স, শপিংমল, চিড়িয়াখানা ও পার্ক স্থাপন করা।

৩৩.৭: প্রতিটি উপজেলায় আন্তর্জাতিক মানের পার্ক ও পিকনিক স্পট নির্মাণ করা হবে এবং জলাশয়গুলিকে পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় করে গড়ে তোলা হবে।

৩৪. শ্রম নীতি
৩৪.১: কর্মস্থলে কাজ করা অবস্থায় কোন শ্রমিক দূর্ঘটনার শিকার হলে আহত বা নিহত শ্রমিককে অবসরের বয়স পর্যন্ত সমুদয় বেতনের সমান ক্ষতি পুরণ দেয়া হবে এবং কর্মরত অবস্থায় অসুস্থ হলে শ্রমিকের স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা খরচ বহন করা হবে। এখানে খরচের ২৫% মালিক, ২৫% মালিকদের নিয়ন্ত্রিত সংগঠন, ২৫% শ্রমিক সংগঠন ও ২৫% সরকার বহন করবে।

৩৪.২: কোম্পানীর নিবন্ধন বা ট্রেড লাইসেন্স প্রদানের সময় শ্রমিকদের জন্যে চিকিৎসা বীমা ও যে কোন একটি নিবন্ধিত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে চিকিৎসা চুক্তি বাধ্যতামূলক করা হবে।

৩৪.৩: কারখানায় মেডিকেল ইউনিট, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইউনিট, দিবাযত্ন কেন্দ্র, পরিচ্ছন্ন টয়লেট সুবিধা, শ্রমিকদের যাতায়াত ও দুপুরের খাবার সুবিধা বাধ্যতামূলক করা হবে।

৩৪.৪: আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।

৩৪.৫: প্রতি বছর শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের নিয়ে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও নিরোধ সংক্রান্ত সচেতনতা কার্যক্রম বাধ্যতামূলক করা হবে।

৩৪.৬: ছয় মাস পর পর কারখানার ভবন ঝুঁকিমুক্ত কিনা নিবন্ধিত প্রকৌশলী কর্তৃক পরীক্ষা করিয়ে সনদ প্রদান বাধ্যতামূলক করা হবে।

৩৪.৭: মামলা করে যদি শ্রমিকের পাওনা আদায় হয়, তবে মামলা করতে শ্রমিকের যে পরিমাণ অর্থব্যয় হয়েছে তার সমপরিমাণ অর্থ ও যে সময় ব্যয় হয়েছে তার সমপরিমাণ মজুরি পরিশোধ বাধ্যতামূলক করা হবে।

৩৪.৮: প্রতিটি জেলায় মূল আদালতের সাথে শ্রম আদালত রাখা হবে।

৩৪.৯: কর্মস্থলের কর্মপরিবেশ ভাল করা, শ্রমিকদের মজুরী নিশ্চিত করা, নির্দিষ্ট মূল্যে বিদেশীদের কাছে পোশাক বিক্রয় করাসহ তৈরী পোশাক খাতের সার্বিক তত্ত্বাবধানের জন্যে এ্যাপারেল বোর্ড গঠন করা হবে।

৩৪.১০: কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য, খনি, গৃহ ও পরিবহনসহ সকল খাতের শ্রমিকদের জন্যে নিশ্চিত কর্মসংস্থান, মালিক পক্ষের জন্যে দরকষাকষির জন্যে সংগঠন, পরিচ্ছন্ন টয়লেট সুবিধাসহ নিরাপদ কর্ম পরিবেশ, নৈতিকভাবে গ্রহনযোগ্য মজুরির নিশ্চয়তা, মুনাফায় অংশ প্রাপ্তির অধিকার, নারী শ্রমিকদের জন্যে সরকারী নিয়মে মাতৃকালিন ছুটিসহ চাকুরি জীবনের স্বাভাবিক অধিকারগুলো ভোগের নিশ্চয়তা প্রদানকল্পে শ্রমিক আইন যুগোপযোগী করা হবে।

৩৪.১১: প্রবাসী শ্রমিক প্রেরণ ও নিরাপদ কর্ম পরিবেশ সৃষ্টিতে সকল প্রকার হয়রানী বন্ধের নিশ্চয়তা প্রদানকল্পে যুগোপযোগী নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে।

৩৪.১২: গৃহকর্মীসহ সকল ব্যক্তিগত স্থায়ী শ্রমিকের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হবে। নিবন্ধন ছাড়া কাজ করালে মালিককে শ্রমিকের এক মাসের বেতনের সমপরিমাণ টাকা জরিমানা করা হবে। নিবন্ধিত সকল শ্রমিককে মাসে একদিন নিকটস্থ থানা শ্রম অফিসের স্বাস্থ্য সহকারী কর্মস্থলে গিয়ে পর্যবেক্ষণ করবে। নিবন্ধিত শ্রমিককে অব্যাহতি বা চাকরির মেয়াদ শেষে বেতনের ১০% পরিমাণ অতিরিক্ত টাকা পরিশোধ করতে হবে। কোন স্বাধীন শ্রমিক এই নীতির আওতায় আসবেন না।

৩৪.১৩: শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষা ও অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং তাদের জন্যে দেশ ও বিদেশে উপযুক্ত কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে।

৩৪.১৪: ট্রেড ইউনিয়নগুলোর কর্মকান্ড পর্যবেক্ষণ করা ও নিবন্ধন প্রদান করা হবে।

৩৪.১৫: সরকারের নিজস্ব শ্রমিক প্যানেল থাকবে যারা বিভিন্ন সময় সরকারী উন্নয়ন প্রকল্পে কাজ করবে।

৩৪.১৬: শ্রম মন্ত্রনালয়ের অধীনে ইউনিয়ন/পৌরসভা/ওয়ার্ড, উপজেলা/থানা, জেলা/মহানগর ও বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রম কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে তাদের কাজ হবে বিভিন্ন সরকারী কাজে শ্রমিক সরবরাহ করা, শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও শ্রম আইন বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখা, শ্রমিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানগুলো পর্যবেক্ষণ করা ইত্যাদি।

৩৫. মন্ত্রীসভা
মন্ত্রীসভায় একজন প্রধানমন্ত্রী ও ত্রিশ জন মন্ত্রী থাকবেন। মন্ত্রনালয়সমুহ নিম্নরূপ-
(১) অর্থ মন্ত্রনালয়
(২) খাদ্য মন্ত্রনালয়
(৩) কৃষি মন্ত্রনালয়
(৪) শিল্প মন্ত্রনালয়
(৫) বাণিজ্য মন্ত্রনালয়
(৬) পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়
(৭) মৎস ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রনালয়
(৮) যোগাযোগ মন্ত্রনালয় (সড়ক/রেল/বিমান/নৌ বিভাগ)
(৯) পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়
(১০) ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়
(১১) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়
(১২) পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়
(১৩) প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়
(১৪) শ্রম ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রনালয়
(১৫) আইন, বিচার ও সংসদ মন্ত্রনালয়
(১৬) জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়
(১৭) গৃহায়ন ও পর্যটন মন্ত্রনালয়
(১৮) বিদ্যুৎ ও জ্বালানী মন্ত্রনালয়
(১৯) দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়
(২০) পল্লী ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রনালয়
(২১) বন, পরিবেশ ও ভূমি মন্ত্রনালয়
(২২) সমাজ কল্যাণ মন্ত্রনালয়
(২৩) নারী ও শিশু মন্ত্রনালয়
(২৪) শিক্ষা মন্ত্রনালয়
(২৫) স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়
(২৬) ক্রীড়া ও সংষ্কৃতি মন্ত্রনালয়
(২৭) তথ্য মন্ত্রনালয়
(২৮) ধর্ম মন্ত্রনালয়
(২৯) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয়
(৩০) মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রনালয়

৩৬. কমিশনসমুহ ও কর্মপরিধি
(১) নির্বাচন কমিশন
(২) দুর্নীতি দমন কমিশন
(৩) মানবাধিকার কমিশন
(৪) আইন কমিশন
(৫) তথ্য কমিশন
(৬) বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন
(৭) জাতীয় কর্ম কমিশন
(৮) পরিকল্পনা কমিশন
(৯) আনবিক শক্তি কমিশন
(১০) জবাবদিহি কমিশন: জনপ্রতিনিধি, বিচারক ও সরকারী কর্মকর্তাসহ রাষ্ট্র পরিচালনায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকল্পে এই কমিশন কাজ করবে।
(১১) মনিটরিং কমিশন: এই কমিশন প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের অধীনে কাজ করবে।